স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশের নারীদের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডের পর ভারতের অধিনায়ক হারমানপ্রীত করের আচরণ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে বেশ। এবার সেই আলোচনায় যোগ দিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটাররাও। নারী দলের কাপ্তানের এমন আচরণে স্বাভাবিকভাবেই হতাশা প্রকাশ করেছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। দাবি করছেন হারমানের বড়সড় শাস্তি।
শনিবার (২২ জুলাই) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারতের চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ তৃতীয় ওয়ানডের সমাপ্তি হয় টাইয়ে। তাতে ট্রফি ভাগাভাগি করতে হয় দুদলকে। তবে ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চের দিনটিকে অখেলোয়াড়সুলভ আচরণ দিয়ে অস্বস্তিকর করে তোলেন হারমানপ্রীত। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান এবং মাঠের খেলায় তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ বিশ্বক্রিকেটেই আলোচনায় এনেছে তাকে।
রোমাঞ্চকর ম্যাচে আউট হয়ে মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি হারমানপ্রীত। আম্পায়ার তানভীর আহমেদ আউটের ইশারা করলে ব্যাট দিয়ে রীতিমতো স্ট্যাম্প ভেঙে ফেলেন তিনি। এসময় তিনি চোখ রাঙানিও দেখান আম্পায়ারকে। তবে মাঠেই ব্যাপারটা সীমাবদ্ধ থাকলেও চলতো। খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও অখেলোয়াড়সুলভ আচরণ করেছেন হারমান।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হারমানপ্রীত সরাসরি প্রশ্ন তোলেন আম্পায়ারিংয়ের দিকে। এরপর দুদলের ফটোসেশনের সময়ও বাংলাদেশ দল এবং আম্পায়ারকে কটাক্ষ করেন তিনি। ছবি তোলার সময় তিনি বলেন, ‘শুধু তোমরা কেন, আম্পায়ার তোমাদের ম্যাচ টাই করিয়েছে। আম্পায়ারকেও ডাকো। একসঙ্গে ছবি তুলি।’ এসময় ভারত অধিনায়কের শরীরী ভাষাতেও ছিল তাচ্ছিল্যের ভাব। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি খুবই অস্বস্তিকর হয়ে ওঠায় নিগার তার দলকে নিয়ে ড্রেসিংরুমে চলে যান।
এ ঘটনার পর এর সমালোচনা হয়েছে বেশ। বাংলাদেশ কিংবা অন্যান্য দেশের মতো এবার সেই সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররাও। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলের ক্রিকেটার মদন লাল হারমানপ্রীতের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়ে ম্যাচের সময়ে ও ম্যাচের পরে হারমানপ্রীত যে সব আচরণ করেছেন, তার সমালোচনা করেছেন দলটির সাবেক অধিনায়ক আনজুম চোপড়াও।
টুইটারে এক পোস্ট করে হারমানের আচরণ নিয়ে মদন লাল বলেন, বাংলাদেশের মেয়েদের বিপক্ষে হারমানপ্রীতের আচরণ ছিল পীড়াদায়ক। সে খেলার চেয়ে বড় নয়। ভারতের ক্রিকেটের জন্য সে দুর্নাম বয়ে এনেছে। ওর বিরুদ্ধে বিসিসিআইয়ের কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
মেয়েদের ক্রিকেটে ভারতের হয়ে ১৫৭টি ম্যাচ খেলা আনজুম চোপড়াও এমন আচরণকে যৌক্তিক মনে করছেন না। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রাগ কমার পর ও যখন শান্ত হবে, আমি নিশ্চিত, অসন্তুষ্টি প্রকাশে যে ওর আরও সচেতন হওয়া দরকার, সেটা নিজেই বুঝবে। অসন্তুষ্টি প্রকাশে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু কীভাবে আর কখন করবে, সেটা দেখতে হবে। কথা বলার সময় শব্দচয়নে ওর আরও যত্নশীল হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, ভারতীয় দল যদি মনে করে যে কিছু সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষে যায়নি, সেটা কি ভিন্নভাবে সামাল দেয়া যেত না? কেন ম্যাচ–পরবর্তী পুরস্কার বিতরণীতে অধিনায়ককে এভাবে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করতে হলো? কীভাবে পরিস্থিতি আরও উত্তুঙ্গ হলো? ভারতীয় দলের হতাশার একটা কারণ হতে পারে নিজেদের মান অনুযায়ী খেলতে না পারা, কিন্তু সেটা ড্রেসিংরুমেই রাখতে পারত। এভাবে জনসমক্ষে প্রকাশ করা ঠিক হয়নি।
আইসিসির পক্ষ থেকে এখ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো শাস্তি দেয়া হয়নি হারমানপ্রীতকে। তবে মাঠ ও মাঠের বাইরে তার আচরণ বিবেচনায় আনলে ভারতের অধিনায়কের শাস্তি যে নিশ্চিত এটা বলাই যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।