জুমবাংলা ডেস্ক : এক কালের উত্তাল যমুনা নদীতে এখন নাব্য সংকট। সিরাজগঞ্জে নদীটির বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য ছোট-বড় আকারের চর। এই সংকট দূর করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেই তেমন কোনো উদ্যোগ। নদীর খনন না হলে চরের আয়তন বাড়বে। আর বর্ষাকালে প্লাবিত হবে নদী তীরবর্তী এলাকা। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তদারকি ও স্থানীয় কৃষকদের উদ্যোগে চরগুলোতে এখন ফসলের আবাদ বাড়ছে। সেখানে ভুট্টার মতো অন্যান্য ফসলের আবাদ আরো বাড়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
জেলার সদর, কাজীপুর, বেলকুচি ও চৌহালীর বেশির ভাগ এলাকায় যমুনা নদীর বুকে জেগে ওঠা বিভিন্ন আকারের চরে ফসল ফলাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন, তারা কষ্টে আছেন। আগের মতো আয় নেই তাদের। কাজীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় যমুনায় জেগে ওঠা চরগুলো আগে অনাবাদি ছিল। সেখানে দেখা যেত কেবল কাশবন। তবে সেই কাশবন কেটে চরগুলোতে অর্থকরী ফসল ফলানো হচ্ছে। নতুন মাইজবাড়ী চরে গিয়ে দেখা যায়, অনেক জমিতে ভুট্টা, মরিচ, বাদাম, ধান, গম, মিষ্টিআলু, মৌসুমি সবজি, ডাল ও কুমড়াসহ অন্যান্য ফসল আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
চৌহালী উপজেলার নৌকার মাঝি হুমায়ুন হোসেন বলেন, অতিরিক্ত স্রোতের কারণে যমুনায় নৌকা বাইতে সাহস পেতাম না, সেখানে এখন নৌকা চলে না। যেসব ঘাটে বড় বড় ফেরি বাঁধা থাকত, সেখানে আজ গরু চরে। ঝাঁকি জাল দিয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। কাজীপুর উপজেলার নতুন মাইজবাড়ী চরের কৃষক জহরুল ইসলাম, মজনু ও আবু সাইদ তরফদার বলেন, গত কয়েক বছর আগেও এ চরে কোনো ফসল আবাদ করা যেত না। ফলে শুষ্ক মৌসুমেও পতিত থাকত এসব জমি। এখানে শুধু কাশবন বেড়ে উঠত। সেই কাশবনই ছিল আমাদের আয়ের উৎস। স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে এখন চরের জমিতে আমরা ভুট্টা, গম, মরিচ, বাদাম, ধান, গম, মিষ্টিআলুসহ নানা ধরনের ফসলের আবাদ করছি। একই চরের কৃষক ইমন ইসলাম বলেন, আমি ও দুই বন্ধু মিলে গত বছর অর্ধশত বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা লাভ করেছি। এ বছরও ৬০ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। ফলনও ভালো। আশা করছি ভুট্টা বিক্রি করে এ বছর ২০ লাখের বেশি টাকা আয় করতে পারব।
কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, এবার উপজেলার ৩ হাজার ১৫০ জন কৃষকের মধ্যে জনপ্রতি ২০ কেজি হারে ডিএপি, ১০ কেজি হারে এমওপি সার ও দুই কেজি হারে ভুট্টার বীজ বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলার চরাঞ্চলের ৯ হাজার কৃষক প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছে। এসব জমি থেকে এবার প্রায় ৯০ হাজার টন ভুট্টা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আপাতত যমুনা নদী খননে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে যমুনা নদী খননে বিশ্বব্যাংকের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। সেটি বাস্তবায়িত হলে নদীর নাব্য সংকট দূর হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।