জুমবাংলা ডেস্ক : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরও দুই হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলাগুলোর মধ্যে একটি মামলায় র্যাবের সাঁজোয়া হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জোবাইদ হোসেন ইমন নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। নিহত ইমন মোহাম্মদপুর থানার দারুননাজাত ইসলামিয়া মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার ইমনের মামা আব্দুল্লা আবু সাইদ ভূঁইয়া মামলাটি দায়ের করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. এ আরাফাত, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সংসদ সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হারুন-অর-রশীদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ড. খ মহিদ উদ্দিন, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন-অর-রশীদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
এছাড়া র্যাবের হেলিকপ্টার টহল টিমের অজ্ঞাতনামা সদস্য ও তাদের কমান্ডিং অফিসারদের অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে একই দিন জনৈক অটোরিকশাচালক শাহাবুদ্দিন হত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। নিহতের বাবা আবুল কালাম এ মামলা করেন।
এ মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা সন্দা বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. এ আরাফাত, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত আইজিপি হারুন-অর-রশীদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
মাদ্রাসা ছাত্র হত্যা মামলায় অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্রসমাজ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করলে ইমন গণআন্দোলনে অংশ নেয়। ছাত্রজনতার আন্দোলনকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে শেখ হাসিনা ১৪ জুলাই গণভবনে প্রেস কনফারেন্সে আন্দোলনকারী ছাত্রদের রাজাকারের বাচ্চা বলে অভিহিত করেন। এতে আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন আরও জোরদার করে। এ অবস্থায় ওবায়দুল কাদের ১৫ জুলাই ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের মোকাবিলা করার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট’মর্মে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে ছাত্রলীগকে গণহত্যার নির্দেশ দেন।
এর ধারাবাহিকতায় আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনদের পরিকল্পনায় ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় আন্দোলনকারীদের নিষ্ঠুরভাবে দমনের জন্য নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের দেখামাত্র গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন। তাদের এ নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর জন্য নিজ নিজ বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দেন চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন-অর-রশীদ, হাবিবুর রহমান। তাদের নির্দেশে বাস্তবায়ন করেন অধস্তন কর্মকর্তারা। ১৯ জুলাই র্যাব সদস্যরা মোহাম্মদপুর আল্লাহ করিম মসজিদে হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোঁড়ে। এর একটি গুলি ইমনের বাম কানের উপর দিয়ে প্রবেশ করে ডান কানের নিচ দিয়ে চোয়াল ভেদ করে বেরিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ইমন।
অটো রিকশাচালক হত্যা মামলায় বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা সমগ্র বাংলাদেশে অগণিত ছাত্র ও সাধারণ জনতা পুলিশের গুলিতে হতাহত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা অনুমান ৭টা ১৫ মিনিটে পরিবারের সদস্যদের জন্য খাদ্য দ্রব্য ক্রয় করার জন্য বাসা থেকে ঘটনাস্থল শেরে নগর বাংলা থানার সামনে গেলে শাহাবুদ্দিনের মাথায় পুলিশের ছোড়া গুলি লাগে। আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে (এন আই এন এস) নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দিনের শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা ও একটি অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।