জুমবাংলা ডেস্ক : রংপুরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে নিম্ন আদালতে এসে মামলটি দায়ের করেন গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত আব্দুল্লাহ আবু তাহিরের বাবা আব্দুর রব।
একই সময় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত, তাজহাট আরেকটি মামলা করেন নিহত রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী। এছাড়া, ১৯ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত মিরাজুল ইসলাম হত্যায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আইনজীবীরা বলছেন, এই তিন মামলায় ৭৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত শতাধিক আসামি করা হয়েছে। এদিকে তিনটি মামলার অভিযোগ পত্র গ্রহণ করে রংপুর তাজহাট থানা ও রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানাকে রেকর্ড করতে নির্দেশ দিয়ে আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যু্বলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই আবু সাঈদের মৃত্যু হয়।
নিহত আবু সাঈদের বাড়ি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায়। আবু সাঈদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়টির বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
এ ঘটনায় ১৭ জুলাই তাজহাট থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী ওই থানার উপপরিদর্শক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বেলা ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ছাত্র নামধারী সুবিধাভোগী রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্তগণ বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ও তাদের নিকটে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র হতে এলোপাতাড়ি গুলি করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও এপিসি গাড়ির মধ্য হতে কং/১১৮৬ সোহেল তার নামীয় সরকারি ইস্যুকৃত শটগান হইতে ১৬৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ফায়ার করে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এজহারে সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে বলা হয়, বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোঁড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের এক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সহপাঠীরা ধরাধরি করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, এই মামলার এজহার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচার হলে রংপুর আবারও উত্তাল হয়ে ওঠে। আবু সাঈদ হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন নাগরিক সমাজ।
পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) স্থানান্তর করা হয়। এছাড়া আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।