জুমবাংলা ডেস্ক : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার সব সদস্য এবং জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্যদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এর ফলে নয়াদিল্লি-ঢাকা সমঝোতা অনুযায়ী হাসিনা এবং দেশত্যাগী অন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের ভারতে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
জনবিক্ষোভের জেরে গত ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বোন রেহানাকে সাথে নিয়ে বিমানে ঢাকা থেকে উত্তরপ্রদেশের হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে গেছেনন হাসিনা। সেই থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। ঠিক কোন ‘ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসে’ তিনি ভারতে রয়েছেন, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদি সরকার কিছু জানায়নি।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট ছিল। ভারত-বাংলাদেশ সমঝোতা অনুযায়ী কূটনৈতিক (ডিপ্লোম্যাটিক) বা সরকারি (অফিশিয়াল) পাসপোর্ট থাকলে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক অন্তত ৪৫ দিন কোনো ভিসা ছাড়াই ভারতে অবস্থান করতে পারেন। কিন্তু মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করায় তার ভারতে অবস্থান অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে।
হাসিনার বোন রেহানার ক্ষেত্রে অবশ্য কোনো কূটনৈতিক জটিলতা নেই। কারণ, তিনি ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী। এর ফলে তিনি সাধারণ ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’ (ভারতের মাটিতে পা রাখার পর ব্রিটিশ নাগরিকদের যে ভিসা মঞ্জুর করা হয়) অনুযায়ী কার্যত যত দিন খুশি, ভারতে থাকতে পারেন।
উল্লেখ্য, একাধিক ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে বিচারের জন্য বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে ইতিমধ্যেই ভারতকে ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছে আর এক সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। সম্প্রতি মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। দেশের স্বরাষ্ট্র ও আইন- এই দুই মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত, তাকে এখন দেশে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।’
এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপ হাসিনাকে ‘প্রত্যর্পণের উদ্যোগ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও ভারত-বাংলাদেশের ‘সংশোধিত ট্র্যাভেল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ অনুযায়ী হাসিনা ভারতে থাকতে পারবেন বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন। হাসিনার জমানাতেই ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই ঢাকায় দুই দেশের সরকারের মধ্যে এই সমঝোতা সই হয়েছিল। সেখানে কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়ে দেশত্যাগীদের ক্ষেত্রে দেড় মাসের বিনা ভিসায় অবস্থানের সুযোগ পুনর্বিবেচনার প্রসঙ্গ রয়েছে বলে ওই অংশের দাবি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel