কুকীর্তি ফাঁসের পর আল জাজিরার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে চেয়েছিলেন হাসিনা

Hasina

জুমবাংলা ডেস্ক : কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ২০২১ সালে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তথ্যচিত্রটি প্রচারের পর এর সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একজন ব্রিটিশ আইনজীবীর পরামর্শ চেয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার। খবর দ্য সানডে টাইমস।

Hasina

রোববার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে টাইমস।

ব্রিটিশ এই গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, তথ্যচিত্র নির্মাণের সঙ্গে জড়িত থাকায় ডেভিড বার্গম্যানকে বাংলাদেশে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনাও করেছিল তৎকালীন সরকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রতিবেদনের জেরে যুক্তরাষ্ট্র তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও তার ভাইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং বাংলাদেশে হুইসেলব্লোয়ারদের (তথ্য ফাঁসকারী) পরিবারের সদস্যদের খেসারত দিতে হয়।

শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, প্রামাণ্যচিত্রটি মানহানিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গণভবনে পাওয়া নথিপত্র থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা লন্ডনের হাইকমিশনের মাধ্যমে ডেসমন্ড ব্রাউনের সঙ্গে আলোচনার জন্য যোগাযোগ করেন। ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ প্রকাশের কয়েক দিন পরই তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

সানডে টাইমস জানায়, একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্রাউন একজন সলিসিটর (আইনজীবী) নিয়োগের পরামর্শ দেন, যিনি তাকে নির্দেশনা দেবেন। তিনি যুক্তরাজ্যভিত্তিক আইনজীবী জেরেমি ক্লার্ক-উইলিয়ামসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। যার সঙ্গে কয়েক দিন পর বাংলাদেশের কর্মকর্তারা সাক্ষাৎ করেন।

নথি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশি কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্যে মানহানির মামলা দায়ের, এমনকি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করার বিষয়েও পরামর্শ চেয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা ডেভিড বার্গম্যানকে ডকুমেন্টারির মূলহোতা দাবি করে বাংলাদেশে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা করেছিলেন।

শেখ হাসিনা সরকারকে প্রাথমিক পরামর্শ দেওয়ার কথা সানডে টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন ডেসমন্ড ব্রাউন। পরে এ ব্যাপারে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানান তিনি। তবে আইনজীবী ক্লার্ক-উইলিয়ামস এ বিষয়ে সানডে টাইমসকে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি প্রাথমিক বৈঠক এবং পরামর্শ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন, কোনো ব্যারিস্টারের পক্ষে সম্ভাব্য ক্লায়েন্টের কাছ থেকে পাওয়া নির্দেশাবলী ফিরিয়ে দেওয়া উন্মুক্ত নয়। তবে তিনি কোনো চিঠিপত্র বা মামলা মোকদ্দমার পথ অনুসরণ করেননি বলেও জানান।

সানডে টাইমস জানায়, হাসিনা সরকার শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে মামলা করার পরিকল্পনা থেকে সরে এসে প্রামাণ্যচিত্রটি সরিয়ে নিতে ইউটিউব ও ফেসবুককে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে উভয় প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে।