নতুন কিছু আলাদাভাবে চিহ্নিত করাসহ নানা কারণেই নাম দিতে হয়। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও কথাটি সত্য। এসব নামের পেছনেও লুকিয়ে থাকে মজার ইতিহাস। আজ দেখা যাক, নাইট্রোজেন শব্দটি কী করে আমাদের হলো? পর্যায় সারণির ১০৮তম মৌলের নাম হ্যাসিয়াম। এই সুপারহেভি মৌলটি খুব তেজস্ক্রিয় স্বভাবের। মৌলটি আবিষ্কারের প্রথম প্রচেষ্টা চালিয়েছিল রুশ বিজ্ঞানীরা। ১৯৭৮ এবং ১৯৮৩ সালে দুদফায় তারা সফলতার দাবিও জানায়। কিন্তু পরে দেখা গেল, সে দাবির কোনো ভিত্তি নেই।
এরপর ১৯৮৪ সালে মৌলটি তৈরি করার চেষ্টা করে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির এক দল বিজ্ঞানী। এতে তারা সফলও হয়। অনামা এবং অনাবিষ্কৃত মৌলগুলোর জন্য পর্যায় সারণির জনক দিমিত্রি মেন্দেলেভের নামকরণ পদ্ধতি অনুসারে এ মৌলের নাম হওয়া উচিত এক-অসমিয়াম। কারণ পর্যায় সারণিতে অসমিয়ামের ঠিক নিচেই এই মৌলের অবস্থান। ১৯৭৯ সালে আইইউপিএসি-এর সুপারিশ অনুসারে, এই মৌলটির সাময়িক নাম দেওয়া হয়েছিল আননিলোকটিয়াম এবং এর সংকেত প্রস্তাব করা হয়েছিল Uno।
তবে মৌলটি আবিষ্কারের পর একটা স্থায়ী নামের প্রয়োজন দেখা যায়। মৌলটি আবিষ্কারের কারণে এর নামকরণের সুযোগ পায় জার্মান দল। জার্মানির যে গবেষণাগারে মৌলটি তৈরি করা হয়েছিল, সেই প্রদেশ হ্যাসের নামানুসারে এর নাম রাখার প্রস্তাব দেয় তারা (বইমেলার জন্য বিখ্যাত ফ্রাঙ্কফ্রুট শহর এই প্রদেশেই অবস্থিত)। ল্যাটিনে ওই প্রদেশের নাম হ্যাসিয়া (Hassia)। তা থেকেই ১০৮তম মৌলটির নাম রাখা হয় হ্যাসিয়াম (Hassium)। ১৯৯৭ সালে এ নামটিই বিজ্ঞানীরা গ্রহণ করেন। এর সংকেত Hs।
হ্যাসিয়াম প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না, কৃত্রিমভাবে তৈরি করতে হয় পার্টিকেল অ্যাক্সিলারেটরে। সেখানেও খুব সামান্য পরিমাণ তৈরি করা যায় এ অতিতেজস্ক্রিয় ও সুপারহেভি মৌলটি। সে কারণে এই মৌলটি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যায়নি। তবে কিছু হিসেব-নিকেষে অনুমান করা হয় যে এর ঘনত্ব পর্যায় সারণিতে বর্তমানে সবচয়ে ঘন মৌল আসমিয়ামের চেয়েও দ্বিগুণ ঘন।
এখন পর্যন্ত ১৩টি আইসোটপের খোঁজ পাওয়া গেছে হ্যাসিয়ামের, যাদের সবগুলোই অতিমাত্রায় অস্থিতিশীল। এদের মধ্যে এর সবচেয়ে স্থিতিশীল আইসোটপের অর্ধায়ু মাত্র ১০ থেকে ১৬ সেকেন্ড।
২০০১ সালের দিকে হ্যাসিয়ামের পাঁচটি পরমাণু তৈরি করে কিছু রাসায়নিক পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এটি পর্যায় সারণির ৭৬তম মৌল ওসমিয়ামের মতো আচরণ করে। হ্যাসিয়াম অক্সিজেনের সঙ্গে খুব দ্রুত বিক্রিয়া করে উদ্বায়ী টেট্রাঅক্সাইড তৈরি করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।