জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোতালেব মিয়ার নিজের কোনো জমি বা ফ্ল্যাট নেই। কিন্তু তারপরও তিনি মাসে ভাড়া পান ৩৫ লাখ টাকা। গত ৫ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোতালেব মিয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে এসব তথ্য তুলে ধরেছেন স্থানীয় এক বাসিন্দা।
অভিযোগে বলা হয়, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোতালেব মিয়া আব্দুল্লাহপুরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জায়গায় গড়ে তুলেছেন মাছের আড়ত। সেখানে ২৮০টি দোকান রয়েছে তার, যা থেকে মাসে ভাড়া আদায় করেন ৩৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এসব দোকানের পজিশন দেওয়ার সময় এককালীন ৫০ হাজার করে নিয়েছেন ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। যারা বিটের পজিশন নিয়েছেন, তারা জামানত হিসেবে ৩ থেকে ৫ লাখ করে প্রায় ১০ কোটি টাকা দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোতালেব মিয়া রাজধানীর আব্দুল্লাহপুরে মাছের আড়তে পাঁচ থেকে সাত ফুট আয়তনের একটি পজিশনকে বিট হিসেবে ভাড়া দিয়েছেন। পুরো আড়তে ২৮০টি বিট হয়েছে। এসব বিট থেকে ৪২০ টাকা করে প্রতিদিন ১ লাখ ১৭ হাজার ৬০০ টাকা আদায় করেন।
এ ছাড়া মাছের আড়তের পশ্চিম পাশে বেড়িবাঁধে গড়ে তুলেছেন রেস্টুরেন্ট, ফল ও কাঁচাবাজার। সেখানের প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ৪০০ টাকা করে ভাড়া নেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, উত্তর ও দক্ষিণখান এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার অটোরিকশা রয়েছে তার। এসব রিকশা থেকে প্রতিদিন ১৫০ টাকা করে আদায় করেন। যা মাসে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। আর ওয়ার্ডের বর্জ্য বাণিজ্য করে মাসে ২ লাখ টাকা আয় করেন। যার কিছুই উল্লেখ নেই আয়কর নথিতে। এটি অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন অভিযোগকারী।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে পাউবোর ঢাকা বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, সড়কের পাশে যেসব জায়গা সবই পানি উন্নয়ন বোর্ডের। নদীর পাড়ের কিছু জায়গা ব্যক্তি মালিকানাধীন থাকলে থাকতে পারে। যেখানে আড়ত নির্মাণ করা হয়েছে সেটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা। তাদের উচ্ছেদ করতে ঢাকা জেলা প্রশাসনের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়া গেলেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর মোতালেব মিয়া বলেন, আব্দুল্লাহপুর মৎস্য খামার গড়ে উঠেছে তারসহ আরও অনেকের। তিনি মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি। তার কাছে জমির দলিল আছে। তার কাছে দুই থেকে তিনটি বিট আছে। এগুলো যদি সরকারি জমি হয়, তাহলে সরকার তা নেবে।
জমির মালিকানার দলিল আয়কর নথিতে নেই কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আয়কর নথিতে জমির পরিমাণ বের করুন। দুদক তাকে তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে মামলা করবে। তিনি বলেন, অটোরিকশা বা অন্য কোনো চাঁদাবাজির সঙ্গে তিনি জড়িত নন।
কাউন্সিলর মোতালেব মিয়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জোন-৯-এর ১৯৭ সার্কেলের একজন করদাতা। তার আয়কর রিটার্নের তথ্য বলছে, তিনি দক্ষিণখানের উত্তর ফায়দাবাদের ৩২ নম্বর হোল্ডিংয়ের একজন বাসিন্দা। তিনি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া বাড়িতে থাকেন। আয়কর নথিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার নিজের কোনো জমি, প্লট, ফ্ল্যাট কিছুই নেই। তিনি ব্যবসা থেকে বছরে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা আয় করেন। তার নগদ ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা, একটি টিভি ও একটি ফ্রিজ রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।