সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল হাসান রাজিব। তার পিতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো: সেলিম মোল্লাও প্রার্থী হয়েছিলেন এই নির্বাচনে। তবে যাচাই বাছাই সেলিম মোল্লার মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়।
জানা গেছে, রাজিবুল হাসান রাজিব গত ২০১৬ ও ২০২২ সালের দুই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন। সেই দুই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়েও ভরাডুবি হয়েছিল তার। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নৌকার প্রার্থীর বিরোধিতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগও রয়েছে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
এছাড়া, ২০১৮ সালে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে ঢাকার তেজগাঁও থানায় করা এক অপরহরণ মামলার প্রেক্ষিতে র্যাব-২ এর একটি অভিযানিক দল একই বছরের ১২ মার্চ রাতে হরিরামপুর উপজেলার কালই এলাকা থেকে রাজিবুল হাসান রাজিবসহ ১০জনকে গ্রেফতার করা হয়। সেসময় তাদের কাছ থেকে ছয়টি ম্যাগজিনসহ পিস্তল, বিপুল পরিমাণ গুলি, ৭টি প্লাষ্টিকের হাতলযুক্ত সাতটি চায়নিজ কুড়াল উদ্ধার করে র্যাব। একইসাথে রাজিবুল হাসান রাজিবের বাড়ি থেকে অপহৃত দুই ব্যবসায়ী, মুক্তিপণের ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, ৩টি খালি স্ট্যাম্প ও কয়েকটি চেক (অপহৃতের স্বাক্ষরিত) উদ্ধার করা হয়।
আরো জানা যায়, রাজিবুল হাসান রাজিব ও তার পিতা সেলিম মোল্লার বিরুদ্ধে অপহরণ এবং অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা রয়েছে। মামলা দুটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
দলীয় প্রতীক নিয়ে বিগত দুই ইউপি নির্বাচনে ভরাডুবির পর এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ায় রাজিবুল হাসান রাজিবকে নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
বিষয়টি নিয়ে একাধিক সাধারণ ভোটারের সাথে কথা হলে তারা জানান, দুইবার ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নন পেয়েও জিততে পারেনি রাজিব। তার মত অস্ত্র মামলার আসামী যদি উপজেলার চেয়ারম্যান হতে চায় এটা সমাজের সচেতন মহলের জন্য লজ্জাজনক এবং সাধারণ মানুষের জন্য হতাশাজনক। এদের মত মানুষের কারণে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের সাথেও তার সখ্যতা রয়েছে। সে চেয়ারম্যান হলে এলাকার সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপন করা কষ্টকর হয়ে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে রাজিবুল হাসান রাজিবের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ও আমার বাবা দুজনেই মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলাম। আমার বাবারটা যাচাই বাছাইয়ে বাতিল হয়েছে। কিন্ত এখনো আপিলের সুযোগ আছে। আপিলে আমার বাবার মনোনয়ন পত্র বৈধ হলে আমি নির্বাচন করবো না। আমার বাবার আপিলের ফলাফল পাওয়ার পর ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়ে এমপি হওয়ার অনেক নজির আছে। যদি ভাগ্যে থাকে আমিও পারবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।