বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : টাইনিটাস বা ‘কানে বাজা’ একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষত আমাদের কাছে যখন হেডফোন বা এয়ারবাডে গান শোনার অভ্যাস তৈরি হয়েছে। টাইনিটাস হলো কানে শিস, গুঁ গুঁ, ভোঁ ভোঁ বা অন্য কোনো অস্বাভাবিক শব্দ শোনা, যেটি বাইরের কোনো আওয়াজ নয়, বরং কানের ভিতর থেকে উৎপন্ন হয়। এই সমস্যাটি শুধুমাত্র একাধিক অস্বস্তি সৃষ্টি করে না, বরং এটি দীর্ঘমেয়াদী শ্রবণশক্তির ক্ষতি করার কারণও হতে পারে।
টাইনিটাসের কারণ:টাইনিটাসের প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত উচ্চ শব্দে দীর্ঘ সময় ধরে গান শোনা, বিশেষত হেডফোন বা এয়ারবাডের মাধ্যমে। এসব ডিভাইস কানের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে, যা শব্দকে অনেক বেশি মাত্রায় কানে প্রভাবিত করে। আর এই শব্দের চাপ কানে ক্ষতিকর হতে পারে, বিশেষ করে যদি তা দীর্ঘ সময় ধরে শোনা হয়।
এছাড়া, টাইনিটাসের আরেকটি কারণ হতে পারে কানে কোনো ইনফেকশন, শারীরিক ট্রমা (যেমন কানে আঘাত পাওয়া), বা বয়সজনিত কারণেও শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
টাইনিটাসের লক্ষণ:
কানে শিসের শব্দ শোনা।
ভোঁ ভোঁ, গুঁ গুঁ, বা হালকা আওয়াজ শোনা।
কখনও কখনও শব্দ শোনা যা চলমান নয়, কিন্তু দীর্ঘসময় ধরে তা বিরক্তি সৃষ্টি করে।
কান ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হওয়া।
টাইনিটাস থেকে বাঁচতে কী করতে হবে:
১. শব্দের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন:
হেডফোন বা এয়ারবাডে গান শোনার সময় নিশ্চিত করুন যে, ভলিউম খুব বেশি না। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ৬০/৬০ নিয়ম অনুসরণ করা ভালো – অর্থাৎ, ৬০% ভলিউমে এবং ৬০ মিনিটের বেশি একটানা গান না শোনার চেষ্টা করুন।
২. বিশ্রাম নিন:দীর্ঘসময় ধরে হেডফোন ব্যবহার করা বা শব্দ শোনার পর, কিছু সময় বিরতি নিন। এই বিরতি কানের ভিতরের স্নায়ুগুলোর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সাহায্য করবে।
৩. নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন ব্যবহার করুন:
এটি বাইরের শব্দ কমিয়ে দেয়, ফলে আপনার কানের ভিতরে শব্দের চাপ কমবে। এর ফলে আপনাকে উচ্চ ভলিউমে গান শোনার প্রয়োজন হবে না।
৪. বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন:
বিশেষ করে যদি আপনি নিয়মিত শোরগোলপূর্ণ পরিবেশে থাকেন (যেমন, কনসার্ট বা নাইট ক্লাব), তখন টাইনিটাস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে, কানে শোনার সময় সতর্ক থাকুন এবং হেডফোনের আওয়াজ নিয়ন্ত্রণ করুন।
৫. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
যদি টাইনিটাসের কোনো লক্ষণ অনুভব করেন বা কোনো অস্বাভাবিক শব্দ শোনেন, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। সময়মতো চিকিৎসা পেলে সমস্যা অনেকাংশে কমানো যেতে পারে।
বিশ্বব্যাপী শ্রবণশক্তি সম্পর্কিত সমস্যা বাড়ছে, আর এর অন্যতম কারণ আমাদের অভ্যাস। হেডফোন ও এয়ারবাডে গান শোনা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু আমাদের কানের সুরক্ষা থাকা উচিত। একটু সচেতনতা এবং সতর্কতা আপনাকে টাইনিটাস থেকে দূরে রাখবে এবং শ্রবণশক্তি সুস্থ রাখবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।