অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ : সময়টাই গরমের। এর মধ্যে হুটহাট কালবৈশাখী ঝড় কিংবা একটু আধটু বৃষ্টির দেখা মিললেও শেষ পর্যন্ত কিন্তু রাজত্বটা গরমেরই। একদিকে কাঠফাটা রোদ। অন্যদিকে বাতাসে অস্বাভাবিক আর্দ্রতা। সবমিলিয়ে জনজীবন হয়ে ওঠে বিপর্যস্ত। ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরমে স্বাস্থ্যসমস্যা, রোগব্যাধি। ঘামাচি কিংবা পানি স্বল্পতার মতো সমস্যা প্রায় প্রত্যেকেরই হচ্ছে। কেউ কেউ হিটস্ট্রোকের মতো মারাত্মক সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। এর সঙ্গে হতে পারে অবসাদ, অ্যালার্জি, সূর্যরশ্মিতে চর্ম পুড়ে যাওয়া, হজমের অভাবে বমি বা ডায়রিয়া জনিত রোগ ইত্যাদি।
গরমের কারণে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা হয় তা হলো পানি স্বল্পতা। প্রচুর ঘামের কারণে পানির সঙ্গে সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণও বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরের রক্তচাপ কমে যায়, দুর্বল লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে। পানিস্বল্পতা গরমে সাধারণ সমস্যা হলেও অবহেলা করলে তা মারাত্মক হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তি, যারা বাইরে কাজ করেন, প্রয়োজন মতো পানি পান করার সুযোগ পান না, তারাই মারাত্মক পানি স্বল্পতায় আক্রান্ত হন বেশি। এ ক্ষেত্রে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং কিডনির সমস্যা হওয়াও বিচিত্র নয়। গরমে এসব সমস্যা থেকে বেঁচে থাকার জন্য যা করতে হবে তা হলো- প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাবেন না। যথাসম্ভব ঘরের ভিতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকতে চেষ্টা করুন। বাইরে বের হলে সরাসরি রোদ যত সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। প্রয়োজনে টুপি বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে। পরনের কাপড় হতে হবে হালকা, ঢিলেঢালা, সুতি কাপড়। শরীরের উন্মুক্ত স্থানে সম্ভব হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে, যা রোদে পোড়া থেকে সুরক্ষা দেবে। প্রচুর পানি ও অন্যান্য তরল পানীয় পান করতে হবে। যেহেতু ঘামের সঙ্গে পানি ও লবণ দুই-ই বেরিয়ে যায়, সেহেতু লবণযুক্ত পানীয় যেমন খাবার স্যালাইন বেশি করে পান করতে হবে। অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে হবে। চা ও কফি যথাসম্ভব কম পান করা উচিত। প্রয়োজনমতো গোসল করতে হবে এবং শরীর ঘাম ও ময়লামুক্ত রাখতে হবে। শ্রমসাধ্য কাজ যথাসম্ভব কম করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কিছুক্ষণ পরপর বিশ্রাম নিতে হবে। প্রচুর পানি ও স্যালাইন পান করতে হবে। গুরুপাক খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। খাবার যেন টাটকা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গরমের সময় বেশি মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। গরমের সময় রাস্তার খাবার এড়িয়ে চলতে পারলে ভালো।
এ সময় ডায়রিয়া, বদহজমের সমস্যা প্রায়ই লেগে থাকে। এগুলো হাত থেকে রেহাই পেতে হলে ফোটানো পানি পান করতে হবে। গরমের সময় দেহের ক্লান্তি দূর করার জন্য বেশি বেশি পানি ও লেবুর শরবত খাওয়ার চেষ্টা করুন। গরমের দিনে ঘেমে যাওয়ার পর পরিচ্ছন্ন গোসল খুবই দরকার।
লেখক : ইমেরিটাস অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।