সুন্দরবনের এই সুন্দর পাখিটির পরিচয় জানা যাক। নাম সুন্দরী হাঁস। সুন্দরবনে থাকে বলেই দক্ষিণ সুন্দরবনে এমন নাম। গোলবনে বেশি থাকে বলে বলা হয় গোইলো হাঁস, শুদ্ধ ভাষায় গোলবনের হাঁস। ইংরেজি নাম মাঙ্গড্ড ফিনফুট। বৈজ্ঞানিক নাম Heliopais personata।
ঠোঁটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত মাপ ৫৪-৫৭ সেন্টিমিটার। গলার তল থেকে বুক পর্যন্ত কালো। কপাল-কপোলও কালো। বুক-পেট সাদাটে বাদামি। পা ও পায়ের আঙুল হলুদরঙা, তাতে সবুজ আভা। চোখের মণি কালো। মণির পাশের বৃত্তটা আলতা-লাল। ঠোঁটের রং কমলা-হলুদ। ডানা বুজানো অবস্থায় পিঠের রং কালচে বাদামি খয়েরি। ঘাড় ও মাথা শ্লেটরঙা। চোখের পাশ থেকে সাদা একটি টান নেমেছে গলার ওপরিভাগ পর্যন্ত।
লেজের নিচের রং গাঢ় ছাই, সবমিলে পাখিটিকে হাঁস বলেই মনে হবে দূর থেকে। চালচলনও সে রকম। তবে পানিতে যখন ভাসে, হাঁসের মতো পুরো শরীর ওপরে থাকে না। শুধু ঠোঁট-মাথা-চোখ জলের ওপরে রেখেও চলতে পারে। ডুবসাঁতারে ওস্তাদ। লেজ ও ডানার পালক ছাড়া শরীরের অন্যান্য পালক মোলায়েম ও পেলব। মাথার তালুর পালক বেশি মোলায়েম, ফোলা ফোলা। ভয় পেলে ওই পালকগুলো একটু জেগে ওঠে এবং আনন্দেও।
যেসব শিশু-কিশোর সুন্দরবনে বেড়াতে গেছে, তাদের অনেকেই হয়তো এই পাখিটিকে দেখেছে। তবে ভীতু বলে ঝট করে লুকিয়ে পড়ে, সহজে দেখা যায় না। থাকে নদী ও খালের পাড়ের গোল কেয়া হেঁতাল বনে। প্রয়োজনে মূর্তির মতো নিথর হতে পারে।
পোষা পাতিহাঁসের খাদ্য তালিকায় যা যা পড়ে, সুন্দরী হাঁসও তাই তাই খায়। তবে সুন্দরবনে যা পাওয়া যায়। শুনেছি ধান-চাল পেলেও খায়।
সুন্দরবনে বেড়াতে গেলে বাঘ হরিণ খোঁজা বা দেখার জন্য চোখে যখন বাইনোকুলার তুলবে, শিশু-কিশোরেরা তখন সুন্দরী হাঁসও খুঁজবে বলে আশা করি আমি। খুব সুন্দর পাখি। আজো আমি সুন্দরবনে গেলে হন্যে হয়ে দেখতে চাই সুন্দরী হাঁস। বারবার দেখেও যে সাধ মেটে না!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।