জুমবাংলা ডেস্ক : কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্ল্যাটে ঢোকার পর এমপি আনারকে সেলেস্তি অভ্যর্থনা জানিয়ে বলেছিলেন- ‘হ্যালো, হাউ আর ইউ’। উত্তরে এমপি আনার বলেন, ‘আই এম ফাইন’। আনারকে অভ্যর্থনা দেওয়ার পর সেলেস্তি ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে যান। রাতে যখন ফ্ল্যাটে ফেরেন তখন প্রচুর ব্লিচিং পাওডারের গন্ধ পেয়েছেন তিনি। সেই সময় সেলেস্তি ফ্ল্যাটে থাকা অন্যদের জিজ্ঞেস করেছেন- ‘গেস্ট (এমপি আনার) কোথায়’। তখন সেলেস্তিকে তারা বলেছে, ‘গেস্ট চলে গেছে।’ এরপর রাতে টয়লেটে প্রচুর পানি ফ্ল্যাশের শব্দ পেয়েছেন সেলেস্তি।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকান্ডে গ্রেফতার সেলেস্তি রহমান সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
এ সময় তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, হত্যার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে তিনি ফ্ল্যাটে থাকা অবস্থায় যতটুকু দেখেছেন তার সম্পূর্ণ সিনারিও তুলে ধরেছেন আদালতের সামনে। জবানবন্দিতে সেলেস্তি উল্লেখ করেছে, কিভাবে হত্যার মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহিনের সঙ্গে তার পরিচয়।
কেনই বা তিনি শাহিনের সঙ্গে কলকাতায় গেছেন। কিভাবে কারসঙ্গে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। এছাড়াও এমপি আনারকে কারা ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে গেছেন। ফ্ল্যাটটিতে ঘটনার আগে ও পরে কারা গিয়েছিল, সকল তথ্যই উঠে এসেছে সেলেস্তির জবানবন্দিতে।
জবানবন্দির বিষয়ে ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেছেন, সেলেস্তি জবানবন্দিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তিনি ডিবির কাছে যেসকল তথ্য জানিয়েছেন, আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে একই কথা বলেছে। তদন্তের জন্য এটাই যথেষ্ট। সারকামসটেনসিয়াল এভিডেন্স (পারিপার্শ্বিক অবস্থা) বলতেছে এখানে দেয়ার ইজ সামথিং, কিন্তু কি ঘটেছে সে জানে না।’
ডিবির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সঞ্জীবার ওই ফ্ল্যাটে কিছু একটা ঘটেছে সেটা সেলেস্তির এ কথায় প্রমাণ হবে।’
উল্লেখ্য, কলকাতার নিউটাউনে সঞ্জীবা গার্ডেনসের যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে, সেটির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কিছু মাংসের টুকরা। সেগুলো এমপি আনারের কিনা, তা জানতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তার রক্তের সম্পর্কীয় স্বজনদের সেখানে যাওয়া প্রয়োজন। এমপি আনার ভারতে গিয়ে নিখোঁজের পর থেকেই তার মেয়ে ডরিন ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। গত ২৪ মে ডরিন এবং আনারের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করেন,।কিন্তু তারা ভিসা পাচ্ছিলেন না। অবশেষে সোমবার ভিসা পান তারা।
গত ১২ মে ভারতে যান এমপি আনার। কলকাতার ব্যারাকপুরসংলগ্ন মণ্ডলপাড়ায় বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন তিনি। ১৩ মে চিকিৎসার কথা বলে বাসা থেকে বের হন আনার। পরে কলকাতার দমদম বিমানবন্দর লাগোয়া নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন এমপি আনার।
এমপি খুনের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২২ মে। ওই দিনই রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আনারের মেয়ে মুতারিন ফেরদৌস ডরিন (২৪) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। এছাড়া ভারতে একটি হত্যা মামলা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।