জুমবাংলা ডেস্ক : ভরা মৌসুমেও বরিশালের প্রধান মৎস্য অবতরণকেন্দ্র পোর্টরোডসহ বাজারগুলোতে দেখা দিয়েছে ইলিশ মাছের সংকট। ফলে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ছোট বড় আকারের ইলিশ ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে আশাবাদী হয়ে ক্রেতারা ইলিশ কিনতে বাজারে ভিড় করলেও চড়া দামের কারণে ফিরে যাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ এখনও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়ানো হচ্ছে। বরিশালের বাজারগুলোতে দ্রুত ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে সংশ্লিষ্টরা, এমনটা প্রত্যাশা বরিশালবাসীর।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সরেজমিনে মৎস্য অবতরণকেন্দ্র পোর্টরোডসহ বাজারে ইলিশ মাছ কিনতে আসা এক ক্রেতা আবদুল মালেক হাওলাদারের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, বর্তমান সময় ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে । তবে বর্তমান সরকার বলেছে আমাদের দেশের মাছ নাকি বিদেশে যাবে না। তাহলে এখন ১ কেজি মাছ ১৬৫০ টাকা দরে কিনছি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মাছের দাম হওয়া উচিত ৫০০ টাকা কেজি। আমাদের দাবি আরও কম দামে ইলিশ মাছ বিক্রি করা হোক।
আর একজন ক্রেতা রশিদ হাওলাদার জানান, আমরা বাসায় বসে ফেসবুক বা ইন্টারনেটে খবরে যে বাজার দর দেখি সরজমিনে বাজারে এসে দেখি ভিন্ন চিত্র। অনলাইনে দামের চেয়ে সব বাজারে পণ্যের দাম দ্বিগুণ। বরিশালের বিশেষ করে পোটরোডসহ অন্যান্য বাজারে লোকাল টাটকা ইলিশ মাছগুলো পাওয়া যায় তার জন্য এই মাছের দাম একটু বেশি। তবে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাছের দাম বাড়ানোর কারণে নিম্ন শ্রেণীর মানুষদের জন্য বর্তমান ইলিশের দাম সাধ্যের বাইরে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি দাম নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১৫০০ টাকা থেকে ১৫২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে এক কেজি ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ১৬৫০ টাকা, ১২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৮০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আবুল কালাম আজাদ নামে এক মৎস্য ব্যবসায়ী বলেন, ইলিশ মাছের আমদানি কম তবে চাহিদা অনেক বেশি। তার জন্য মাছের দাম একটু বেশি। শুনেছি নদীতেই মাছের সংখ্যা কম তাই বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। মাছের দাম একটু বেশি হওয়ায় আমাদের বেচা-বিক্রিও অনেক কমেছে। ক্রেতারা আসে তবে তাদের সাধ্যের মধ্যে না হয় বেশির ভাগ ক্রেতারাই ফিরে যায়।
অন্যদিকে পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, নদী ও সাগরে পর্যাপ্ত ইলিশ নেই। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অর্ধেক মাছও আসছে না আড়তে। ফলে তূলনামূলকভাবে কমেনি দাম।
বরিশাল জেলা মৎস পাইকারি অবতরণ কেন্দ্র মালিক সমিতির কোষাধাক্ষ মো. ইয়ার উদ্দিন শিকদার জানান, বেশ কয়েকদিন থেকে নদীতে ইলিশের সংখ্যা কম হওয়ায় আমদানিও কম। তাই বাজারে অন্য সব দিনের তুলনায় দাম একটু বেশি। নিম্ন চাপ থাকায় এতদিন ছেলেরা বেকার ছিল। গত কয়েকদিন হলো তারা সাগরে গিয়েছে। জেলেরা ফিরে আসলেই বাজারে ইলিশের দাম অনেকটাই কমে আসবে। তবে সাগরে যেতে হলে আগের চেয়ে জেলেদের তৈলের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ইলিশের দামও একটি বেশি বলে জানান তিনি।
বরিশালে এক আড়ৎদার ও বরফ ব্যবসায়ী আমির হোসেন জানান, জেলেরা বেশিরভাগই মাছ পায় তবে কুয়াকাটা থেকে বরিশালে আসতে তৈলের অনেক খরচ হয়। তবে এখানে এসে তুলনামূলকভাবে দাম না পাওয়ায় বিভিন্ন হতাশার কারণে বেশি ভাগ জেলেরাই আসা বন্ধ করে দেয়। সেজন্যই মাছের দাম বেশি আর বরফ বেচা-বিক্রি তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম।
বরিশাল জেলা মৎস কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ জানান, বাজারে সাগরের মাছ আসলেই ইলিশের দাম কমে যাবে, তবে আমাদের বাজার দরের ওপরে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যদি বেশি দামে ইলিশ মাছ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।