জুমবাংলা ডেস্ক : বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ মানুষ উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে বিপাকে পড়েছেন। দৈনন্দিন ব্যয়ের ভারে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ সঞ্চয় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবুও যারা কিছুটা সঞ্চয় করতে পারছেন, তারা সেটিকে নিরাপদ ও লাভজনক বিনিয়োগে পরিণত করতে চান। তাদের জন্য ট্রেজারি বন্ড হতে পারে একটি আদর্শ বিকল্প।
Table of Contents
ট্রেজারি বন্ড: নিরাপদ ও লাভজনক বিনিয়োগ
সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত এবং রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টিযুক্ত এই বন্ড বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের চেয়ে বেশি মুনাফা দিচ্ছে। ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করলে নির্ধারিত সময় অন্তর সুদ পাওয়া যায়। এটি কর রেয়াতের সুবিধাও দিতে পারে, যা একজন বিনিয়োগকারীর জন্য বাড়তি লাভের সুযোগ তৈরি করে।
ট্রেজারি বন্ড কী?
ট্রেজারি বন্ড হলো সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত একটি ঋণপত্র, যার মাধ্যমে সরকার জনসাধারণের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করে এবং নির্ধারিত সময় শেষে সুদসহ তা ফেরত দেয়। এটি সাধারণত ৫ থেকে ২০ বছর মেয়াদী হয়ে থাকে। ছয় মাস অন্তর অন্তর সুদ প্রদান করা হয় এবং বন্ডটি রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি বহন করে, তাই এটি অত্যন্ত নিরাপদ।
সুদের হার
সরকারের ছয় ধরনের ট্রেজারি বন্ড রয়েছে। নিচে সময় অনুযায়ী সুদের হার দেওয়া হলো:
- ২ বছর মেয়াদি বন্ড: ১১.৭২% – ১১.৯৭%
- ৩ বছর মেয়াদি বন্ড: ১২.০০% – ১২.৯৪%
- ৫ বছর মেয়াদি বন্ড: ১১.৩৮% – ১১.৯৯%
- ১০ বছর মেয়াদি বন্ড: ১১.৫৫% – ১১.৮৮%
- ১৫ বছর মেয়াদি বন্ড: ১২.৩৯% – ১২.৪০%
- ২০ বছর মেয়াদি বন্ড: ১২.৪৪% – ১২.৪৬%
এই হারের তারতম্য বাজার পরিস্থিতি ও নিলামের ভিত্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে।
বিনিয়োগ পদ্ধতি
বাংলাদেশে ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করার তিনটি প্রধান উপায় রয়েছে:
- বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে: অনেক তফসিলি ব্যাংক বিনিয়োগ হিসাব খোলার পর বন্ড কেনার সুযোগ দেয়।
- বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে: বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত নিলামের মাধ্যমে বন্ড ইস্যু করে। প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকের মাধ্যমে এতে অংশ নেওয়া যায়।
- স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (CSE) কিছু ট্রেজারি বন্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে। ব্রোকার হাউসের মাধ্যমে BO হিসাব খুলে বিনিয়োগ করা যায়।
কারা বিনিয়োগ করতে পারেন?
নিম্নোক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন:
- সাধারণ নাগরিক
- প্রবাসী বাংলাদেশি
- ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান
- বিমা কোম্পানি
- পেনশন ও গ্র্যাচুইটি ফান্ড
- করপোরেট হাউস ও বহুজাতিক কোম্পানি
- এনজিও ও ট্রাস্ট
বিনিয়োগের পূর্বে বিবেচ্য বিষয়সমূহ
- সুদের হার ও মেয়াদ: আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য অনুযায়ী উপযুক্ত মেয়াদি বন্ড নির্বাচন করুন।
- বাজার বিশ্লেষণ: সুদের হারের পরিবর্তন, বাজারের চাহিদা ও আর্থিক প্রেক্ষাপট পর্যবেক্ষণ করুন।
- পেশাদার পরামর্শ: বিনিয়োগের আগে অর্থনৈতিক পরামর্শদাতার সঙ্গে আলোচনা করা বাঞ্ছনীয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।