বিনোদন ডেস্ক : বেশ কয়েক দশক ধরেই হিন্দি সিনেমায় বাঙালি অভিনেত্রীরা নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন। উপহার দিয়েছেন ব্যবসা সফল ছবি। বলিউড দাপিয়ে বেড়ানো এমনই কয়েকজন বাঙালি অভিনেত্রীকে নিয়েই এই আয়োজন।
সুচিত্রা সেন
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। ১৯৫৫ সালে ‘দেবদাস’ ছবির মাধ্যমে হিন্দি ছবিতে অভিষেক হয় তার। এরপর তিনি পাঁচটি হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেন। কিন্তু সেগুলো ব্যবসাসফল হয়নি। যদিও ১৯৭৫ সালে ‘আঁধি’ সিনেমায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলেন।
মালা সিনহা
পঞ্চাশের দশকে বড় পর্দা দাপিয়ে বেড়ানো অভিনেত্রীদের অন্যতম মালা সিনহা। প্রায় একশ’র হিন্দি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর কয়েকটি হলো ‘পেয়াসা’, ‘বাবু’, ‘দিল তেরা দিওয়ানা’ প্রভৃতি।
জয়া ভাদুড়ি
বলিউড অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে বিয়ের সুবাদে জয়া ভাদুড়ি এখন জয়া বচ্চন নামেই পরিচিত। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘মহানগর’ ছবি দিয়ে অভিনয়যাত্রা শুরু করলেও তার অভিনীত প্রথম হিন্দি ‘গুড্ডি’ মুক্তি পায় ১৯৭১ সালে। ‘শোলে’, ‘চুপকে চুপকে’র মতো বেশ কিছু হিট সিনেমা তার ঝুলিতে রয়েছে। বিয়ের পর সাময়িকভাবে চলচ্চিত্র থেকে অবসর নেন। এরপর ১৯৯৮ সালে ‘হাজার চৌরাসি কি মা’ ছবির মাধ্যমে আবারও রুপালি পর্দায় ফিরে আসেন তিনি।
শর্মিলা ঠাকুর
বাংলা-হিন্দি দুই ভাষাতেই সমানতালে অভিনয় করেছেন শর্মিলা ঠাকুর। তার বড় পর্দায় যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫৯ সালে সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ ছবির মাধ্যমে। ভারতের বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের মেয়ে শর্মিলা অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পরও ছবির দুনিয়া থেকে পুরোপুরি সরে যাননি। সিনেমা-সংক্রান্ত নানা কাজে তাকে এখনও দেখা যায়।
অপর্ণা সেন
সত্তরের দশকে বাংলা ছবির জনপ্রিয় মুখ অপর্ণা সেনের প্রথম হিন্দি সিনেমা ‘ইমান ধরম’। এই ছবিতে তার সহশিল্পী ছিলেন অমিতাভ বচ্চন, শশী কাপুর ও সঞ্জীব কুমার। এরপর আরও কয়েকটি হিন্দি ছবিতে তাকে দেখা গেলেও, ছবিগুলো সেভাবে সাফল্য পায়নি। অভিনয়ের পাশাপাশি অপর্ণা সেন একজন চিত্রপরিচালকও। নিয়মিত বাংলা সিনেমা পরিচালনা করেন তিনি।
মুনমুন সেন
মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের কন্যা মুনমুন সেন বিয়ের পরই প্রথম অভিনয় করেন। বলিউডে মায়ের মতো সাফল্য না পেলেও হিন্দি, বাংলা ও তেলেগু মিলিয়ে মোট ৬০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। তার দুই কন্যা রাইমা ও রিয়াও বাংলা ও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করছেন।
কাজল
মা মারাঠি অভিনেত্রী তনুজা ও বাবা বাঙালি পরিচালক সমু মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে কাজল নব্বইয়ের দশকের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। মাত্র সতেরো বছর বয়সে ‘বেখুদি’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন কাজল। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’সহ আরও অনেক সিনেমায় অভিনয় করেন। শাহরুখ খানের সঙ্গে তার জুটি সর্বকালের সেরা জনপ্রিয় বলিউড জুটিগুলোর অন্যতম।
রানি মুখার্জি
শুরুতে সিনেমায় আসতে চাননি অভিনেত্রী রানি মুখার্জি। পরে মায়ের জোরাজুরিতে ‘বিয়ের ফুল’ নামের একটি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেন। ছবিটি সুপারহিট হলে হিন্দি সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। ‘গুলাম’, ‘হাম তুম’ বা ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবিতে অভিনয় করে রানিও তার চাচাতো বোন কাজলের মতো নব্বইয়ের দশকে নিজের জায়গা করে নেন।
সুস্মিতা সেন
১৯৯৪ সালে ‘মিস ইউনিভার্স’ শিরোপা জেতেন আঠারো বছর বয়সী মডেল সুস্মিতা সেন। এরপর বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। উল্লেখযোগ্য তিনটি ছবি ‘বিবি নং ১’, ‘ম্যায় হু না’ ও ‘সেফ তুম’।
বিপাশা বসু
সুস্মিতা সেনের মতোই আরেক বাঙালি মডেল বিপাশা বসু বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। ‘জিসম’, ‘রাজ’ ইত্যাদি ছবিতে সাহসী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বলিউডে তাকে ‘ডাস্কি সিডাকট্রেস’ বা ‘লাস্যময়ী শ্যামবর্ণা’ নামে ডাকা হয়।
কঙ্কনা সেনশর্মা
অভিনেত্রী অপর্ণা সেনের কন্যা কঙ্কনা সেনশর্মা বলিউডে অন্যধারার ছবিতে অভিনয়ের জন্যই পরিচিত। দু’বার জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী এই অভিনেত্রী ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার’, ‘ওমকারা’ ও ‘ওয়েক আপ সিড’-এর মতো নানা বিষয়ের ছবিতে অভিনয় করে দর্শক থেকে সমালোচক পর্যন্ত সব মহলেই সমাদৃত। অভিনয়ের পাশাপাশি মায়ের মতোই সিনেমা পরিচালনাও করেন।
সাহানা গোস্বামী
‘রক অন’, ‘ব্রেক কে বাদ’, ‘হিরোইন’-এর মতো ভিন্ন ধরনের বলিউডি ছবির অভিনেত্রী সাহানা ভারতের বাইরেও অনেক ছবিতে অভিনয় করেছেন। ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ ছবিতে অভিনয় করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।