যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টিক উপকূলে হর্সশু ক্র্যাব নামে একটি প্রাচীন প্রাণী বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, আবাসস্থল ধ্বংস এবং অত্যধিক শিকারের কারণে এই প্রজাতির সংখ্যা দ্রুত কমছে। ৪৫ কোটি বছর ধরে টিকে থাকা এই প্রাণীটি এখন মানবসৃষ্ট পরিবেশগত সংকটের মুখোমুখি।
বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি বছর ২% থেকে ৯% হারে কমছে হর্সশু ক্র্যাবের সংখ্যা। Nature জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু শিকার নয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিও প্রধান হুমকি।
হর্সশু ক্র্যাব বিলুপ্তির প্রভাব
হর্সশু ক্র্যাবের সংখ্যা কমলে পুরো উপকূলীয় পরিবেশ ব্যবস্থায় প্রভাব পড়বে। প্রতি বসন্তে পরিযায়ী পাখিরা এই ক্র্যাবের ডিম খেয়ে থাকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে। ক্র্যাবের সংখ্যা কমলে পাখিদের খাদ্য সংকট দেখা দেবে।
ক্র্যাবের মাটি খননের অভ্যাস উপকূলের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করে। তারা না থাকলে অন্যান্য সামুদ্রিক প্রজাতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সমুদ্রের তলদেশের পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
হর্সশু ক্র্যাব বাঁচাতে করণীয়
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সাগরের তীরে বালুচর সংরক্ষণ করতে হবে। প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। Sacred Heart University-র ড. জেনিফার ম্যাটেই এরই মধ্যে সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
হর্সশু ক্র্যাবের রক্ত ওষুধ শিল্পে ব্যবহার হয়। এই রক্তের বিকল্প হিসেবে Recombinant Factor C (rFC) নামক কৃত্রিম পদার্থ ব্যবহার করা যেতে পারে। বন্য প্রাণী নিধন কমাতে এই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন।
দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য নিয়মিত মনিটরিং জরুরি। Project Limulus-এর মতো গবেষণা কার্যক্রম আরো বাড়াতে হবে। স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে সংরক্ষণ কার্যক্রম সফল হবে।
হর্সশু ক্র্যাব সংরক্ষণের গুরুত্ব
হর্সশু ক্র্যাব শুধু একটি প্রাণী নয়। এটি আমাদের পরিবেশগত স্বাস্থ্যের সূচক। এই প্রাচীন প্রজাতি টিকিয়ে রাখতে পারলেই প্রমাণ হবে আমরা আমাদের গ্রহ রক্ষায় সক্ষম। হর্সশু ক্র্যাব বিলুপ্তি রোধ করতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
জেনে রাখুন-
হর্সশু ক্র্যাব কি সত্যিই ৪৫ কোটি বছর পুরনো?
হ্যাঁ, ফসিল রেকর্ড অনুযায়ী হর্সশু ক্র্যাব পৃথিবীতে ৪৫ কোটি বছর ধরে টিকে আছে।
হর্সশু ক্র্যাবের রক্ত কেন গুরুত্বপূর্ণ?
ওষুধ শিল্পে ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করতে এই রক্ত ব্যবহার করা হয়। এটি মানবদেহের জন্য নিরাপদ।
হর্সশু ক্র্যাব বিলুপ্ত হলে কী হবে?
উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হবে। পরিযায়ী পাখিরা খাদ্য সংকটে পড়বে।
হর্সশু ক্র্যাব রক্ষায় কী করা যেতে পারে?
উপকূল সংরক্ষণ, বিকল্প প্রযুক্তি ব্যবহার এবং নিয়ন্ত্রিত শিকার নীতি মেনে চলা যেতে পারে।
হর্সশু ক্র্যাব কোথায় পাওয়া যায়?
যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টিক উপকূল এবং এশিয়ার কিছু দেশে হর্সশু ক্র্যাবের বসবাস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।