আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হঠাৎ দেখলেন আপনার পায়ের তলার মাটি নেই। আপনি পড়ে যাচ্ছেন শত শত ফুট মাটির নিচে। এটা কোন ফ্যান্টাসি সিনেমার অংশ নয় এটা সত্যি। নানা প্রাকৃতিক অবস্থার কারণে হঠাৎ এমন শত শত ফুট নিচে দানবীয় গর্তের সৃষ্টি হতে পারে। যাকে বলা হয় সিঙ্কহোল বা ধস গহ্বর।
বুধবার এমনটাই ঘটেছে মার্কিন আমেরিকার ইলিনয় স্টেটের একটি খেলার মাঠে। হঠাৎ করেই মাঠের একটি জায়গায় সৃষ্টি হয় ১০০ ফিট চওড়া আর ৩০ ফিট গভীরতার এক প্রকান্ড গর্ত। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় যে, হঠাৎ করেই লাইটের খুটি, খেলোয়াড়দের বসার বেঞ্চসহ মাঠটিতে প্রকান্ড একটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবে আশার কথা হচ্ছে ঠিক ওই সময়ে মাঠে কেউ না থাকায় কোন ধরণের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তবে আমারিকার ফুটবল মাঠের সিঙ্কহোলটি পৃথিবীর প্রথম সিঙ্কহোল এমন নয়, পৃথিবীতে এমন ঘটনা ঘটেছে আরো বেশ কয়েকবার। পৃথিবীর বুকে আছে এমন আরও বড় বড় ক্ষত। শুধু যে ভূপৃষ্ঠেই এমন সিঙ্কহোল হয় তা কিন্তু নয়। জলভাগেও দেখা যায় এমন বড় গর্ত হতে দেখা যায়।
দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থিত ‘ড্রাগন হোল’ খ্যাত সর্বোচ্চ গভীর সিঙ্কহোল। এটি প্রায় ৩০০ মিটার গভীর ও এর উপরিভাগে বিভিন্ন সামুদ্রিক জীবের অস্তিত্বও পাওয়া গেছে।
সাধারণত বৃষ্টির পানি মাটির নিচে একটি স্তরে গিয়ে জমা হয়। বিভিন্ন কারণে যখন সেই পানি উত্তোলন করা হয়, তখন মাটির নিচে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়। যখন মাটির উপরিভাগের ওজন বেশি হয়, তখনই ফাঁকা জায়গায় ভূমিধস হয়ে বিশালাকার গর্ত তৈরি হয়।
এছাড়াও মাটির নিচে যেখানে চুনাপাথর, কার্বনেট শিলা, লবণের স্তর, পাথর, বালি ইত্যাদি বেশি পরিমাণে রয়েছে সেখানে সিঙ্কহোল বা বিশাল আয়তের গর্ত সৃষ্টি হতে পারে।
কারণ, ভূগর্ভস্থ পানির মাধ্যমে খনিজ পদার্থ দ্রবীভূত হয়। শিলা দ্রবীভূত হলে মাটির নিচে ফাঁকা জায়গা বৃদ্ধি পায়। ক্রমে ক্রমে ফাঁকা স্থানের বৃদ্ধির ফলে মাটির উপরিভাগের ভার অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। এক সময় উপরিভাগের ভূমিধস ঘটে সিঙ্কহোল সৃষ্টি হয়।
একেকটি সিঙ্কহোল আয়তনে কয়েক ফুট থেকে কয়েকশো ফুট পর্যন্ত হতে পারে, যা তৈরি হতে সময় লাগে কযেক দশক থেকে শতাব্দী।
প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট সিঙ্কহোলগুলো মাটির গঠন ও এর অভ্যন্তরে থাকা বিভিন্ন ধরনের খনিজ ও শিলার উপর ভিত্তি করে কয়েক ধরনের হতে পারে; যেমন- ডিসসল্যুশন সিঙ্কহোল, কভার-সাবসিডেন্স সিঙ্কহোল এবং কভার কোলাপ্স সিঙ্কহোল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।