সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : স্বামী ও শ্বশুরের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে দুই শিশু সন্তান রেখে আত্মহত্যা করেছেন বৃষ্টি আক্তার (২৭) নামের এক গৃহবধু। গত সোমবার (৩০ জুন) রাতে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মকিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার বিকেলে নিহত বৃষ্টির ভাই মো. সুমন মাহমুদ বাদী হয়ে স্বামী সাদ্দাম হোসেন (৩১) ও শ্বশুর মো. মোজাম মিয়ার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রায় আট বছর আগে ঢাকার ধামরাই উপজেলার কালামপুর মধ্যপাড়া এলাকার আহাম্মদ আলী ওরফে নয়া মিয়ার মেয়ে বৃষ্টির সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় সাদ্দাম হোসেনের। বিয়ের পর থেকেই সাদ্দাম বিভিন্ন নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান। স্ত্রী এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন তিনি। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিশ হলেও সাদ্দামের আচরণে পরিবর্তন আসেনি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সোমবার রাত ৯টার দিকে সাদ্দামের মোবাইল ফোনে এক নারীর কল আসে। বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বৃষ্টিকে গালাগাল করেন। পরে তার পিতা মোজাম মিয়াও ছেলের পক্ষ নিয়ে বৃষ্টিকে গালাগাল করেন। একপর্যায়ে সাদ্দাম স্ত্রীকে চড়-থাপ্পড় মারেন এবং বলেন, ‘ফাঁস দিয়ে বা বিষ খেয়ে মরতে পারিস না?’ এই বলে তিনি ঘর থেকে বের হয়ে যান।
এর কিছুক্ষণ পরই বৃষ্টি ঘরের ভেতরে গিয়ে কীটনাশক পান করেন। পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে অবস্থার অবনতি হলে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বৃষ্টি আক্তারের চার বছর বয়সী কন্যা তায়েবা এবং ১৪ মাস বয়সী তাহিয়া রয়েছে।
নিহতের ভাই মো. সুমন মাহমুদ বলেন, ‘আমার বোনকে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করছিল সাদ্দাম ও তার বাবা। সোমবার রাতে যা করেছে, তা সরাসরি আত্মহত্যায় প্ররোচনা। আমরা এর বিচার চাই।’
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, ‘ঘটনার পর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।