আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পিপলস লিবারেশন আর্মি রকেট ফোর্সের (পিএলএআরএফ) ওর খুবই গুরুত্ব দিয়েছে চীন। এটি চীনের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমতুল্য। পিএলআরএএফকে বিশ্বাসযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য শক্তি সঞ্চার, পাল্টা আক্রমণের সক্ষমতা মাঝারি ও দূর পাল্লার আঘাত হানার ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
পিএলএআরএফের লক্ষ্য হলো শক্তিশালী শত্রুর (যুক্তরাষ্ট্র?) বিরুদ্ধে লড়াই করা, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ মোকাবেলা করা এবং বিশ্বব্যাপী শক্তি প্রদর্শন করা।
এই বাহিনী চীনের প্রতিবেশীদের, বিশেষ করে ভারতের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করেছে। তারা স্থানীয়, আঞ্চলি ও বৈশ্বিক সামরিক সঙ্ঘাতকে প্রভাবিত করতে পিএলএকে সহায়তা করে। পিএলএআরএফ হলো শক্তিশালী ও আধুনিক রকেট কাম মিসাইল বাহিনী।
এটি পৃথিবীতে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী। এই সদ্য সৃষ্ট বাহিনী চীনের স্থলভিত্তিক পরমাণু এবং প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীকে সঙ্ঘবদ্ধ করা, লোকবল দেয়া এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
এই বাহিনীর হাতে থাকা কোনো কোনো ক্ষেপণাস্ত্র প্রচলিত ও পরমাণু যুদ্ধাস্ত্র বহন করতে পারে। তারা স্থল ও নৌপথে টার্গেটকে আঘাত হানতে পারে। শত্রু পক্ষের ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিহত করার সক্ষমতা রয়েছে তার।
ফ্রাকশনাল অরবিটাল বোম্বাডমেন্ট (এফওবি) ব্যবহার করে হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিক্যাল উৎক্ষেপণ করার সক্ষমতাও রয়েছে পিআরসির।
মার্কিন হিসাব অনুযায়ী, পিএলএআরএফের প্রায় ৩,১৫০টি বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। পিএলএআরএফের প্রচলিত অংশের প্রায় ২,৫০০ ব্যালাস্টিক এবং ক্রুইজ ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।
ধারণা করা হয়, দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন রণতরীর ওপর জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর সক্ষমতা তার রয়েছে। চীনের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার তুলনায় ছোট। তবে সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের রয়েছে পাঁচ শতাধিক যুদ্ধাস্ত্র এবং ২০৩০ সাল নাগাদ তা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
চীনের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার সার্বক্ষণিকভাবে আধুনিকায়ন, হালনাগাদ এবং সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
ধারণা করা হয়, এই বাহিনী শত্রুর বিমান প্রতিরক্ষাকে দমন করতে পারবে, চীনা স্থল, আকাশ বা সাগর পথে শত্রুকে প্রতিহত করতে সক্ষম। তারা যুদ্ধকে চীনের শত্রুর ভূখণ্ডে নিয়ে যেতে সমর্থ্য।
পিএলএআরএফের প্রধান লক্ষ্য তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চীন সাগর। তবে তারা কোরিয়া উপদ্বীপ, ভারত, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধও সক্ষমতা বজায় রাখছে।
পিএলএআরএফের বর্তমানে অন্তত ৪০টি কমব্যাট ক্ষেপণাস্ত্র ব্রিগেড রয়েছে। এগুলো ছয়টি ঘাঁটিতে বিভক্ত, প্রতিটিতে আছে আটটি করে ব্রিগেড।
এছাড়া চীন মোবাইল লাঞ্চারের সংখ্যা বাড়াচ্ছে। লক্ষণীয় বিষয় হলো, সকল নতুন সাইলো চীনের গভীরে তৈরী করা হচ্ছে। গভীরতা ছাড়াও এই মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও রাশিয়ায় পৌঁছার সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
তবে পিএলএআরএফের অন্যতম দুর্বলতা হলো বিদেশে তাদের ঘাঁটি নেই, রণতরীর অভাব রয়েছে, অত্যাধুনিক জঙ্গিবিমানের সমস্যাতেও রয়েছে তারা। অথচ বৈশ্বিক শক্তি হতে হলে এগুলোর প্রয়োজন রয়েছে।
এছাড়া চীনের মিসাইল ইন্টারসেপ্টর সিস্টেমগুলো এখনো পরীক্ষাধীন রয়েছে এবং এর জন্য রাশিয়া থেকে সংগ্রহ করা এস৩০০ সিস্টেমের ওপর নির্ভরশীল। স্তরীভূত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা ছাড়া এই সিস্টেমটি অরক্ষণীয় হয়ে পড়তে পারে।
অধিকন্তু, এর টেকটিক্যাল অবস্থা সীমিত। যুদ্ধে এটা বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। আর যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে রকেটের ভূমিকা এবং দক্ষতা সীমিত হয়ে পড়বে। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে বিষয়টি দেখা গেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে চীনের সাথে সংখ্যাগত দিক থেকে ভারত প্রতিযোগিতা করতে পারবে না। তবে ভারতকে ন্যূনতম ব্যয়ের ভিত্তিতে কাঙ্ক্ষিত ফলাফলের দিকে নজর দিতে হবে। ভারতকে গুণগত অবস্থার দিকে জোর দিতে হবে।
সূত্র : ইউরেশিয়ান টাইমস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।