মুফতি জাকারিয়া হারুন : ইসলামে সবচেয়ে অপছন্দের বিষয় ডিভোর্স। ইসলাম সংসার ভাঙাকে পছন্দ করে না। তবে নিরুপায় অবস্থায় ডিভোর্স দেয়ার অনুমতি দিয়েছে ইসলাম। প্রাথমিকভাবে বুঝানো, ছাড় দেয়া, পরিবারের মুরুব্বিদের মাধ্যমে বুঝানো।
ডিভোর্সের আরবি প্রতিশব্দ হচ্ছে তালাক। তালাক আরবি শব্দ। এর অর্থ ত্যাগ করা, বন্ধন মুক্ত করা, বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, ছেড়ে দেয়া। ইসলামি পরিভাষায়, বিশেষ শব্দের মাধ্যমে বিয়েবন্ধন ছিন্ন করাকে তালাক বলা হয়।
ইদ্দত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো গণনা করা। পরিভাষায় নারীদের ওই সময় পর্যন্ত অন্যত্র বিয়ে করা থেকে বিরত থাকাকে ইদ্দত বলে। যখন তার আগের বিয়ের প্রভাব প্রকাশ যেমন অন্তঃসত্ত্বা ইত্যাদির সম্ভাবনা শেষ হয়েছে বলে শরিয়ত নির্ধারণ করেছে।
ডিভোর্সের কতদিন পর বিয়ে করা যায়?
ডিভোর্সের মাধ্যমে বিয়ে বিচ্ছেদ হয় তাহলে কিছুদিন অন্যত্র বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে না। ইদ্দত পালন করা নারীদের জন্য আবশ্যক। ডিভোর্সের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হলে তিন হায়েজ (পিরিয়ড) পরিমাণ সময় হলো ইদ্দত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েজ পর্যন্ত। (সুরা বাকারা, আয়াত: ২২৮)
আর যদি স্বামী মারা যায়, তাহলে স্ত্রীকে চার মাস ১০ দিন ইদ্দত পালন করতে হয়। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদের স্ত্রীরা চার মাস ১০ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৩৪)
ইসলামি শরিয়তে, ইদ্দত পালন না করেই কোনো নারী যদি দ্বিতীয় বিয়ে করে, ওই বিয়ে শুদ্ধ হবে না। (মুসলিম: ১৪৮২; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩২৫; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৩৫)
আর যে নারীকে বিয়ের পর সহবাসের পূর্বে তালাক দেয়া হয় তার ওপর কোনো ইদ্দত নেই। মহান আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ, যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিয়ে করবে অতঃপর তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বেই তালাক দিয়ে দেবে, তাহলে তোমাদের জন্য তাদের কোনো ইদ্দত নেই যা তোমরা গণনা করবে। (সুরা আহজাব, আয়াত: ৪৯)
ইদ্দত তিন হায়েজ এজন্য বলা হয়েছে, নারীদের হায়েজ বা পিরিয়ডের নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা থাকে না। একেকজনের একেক রকম হয়। কারও তিন দিন, কারও চার,পাঁচ, সাত দিন হয়। তাই কোরআনে তিন হায়েজ বলা হয়েছে। তালাক দেয়ার পর তিনটি হায়েজ হওয়া পর্যন্ত অন্য কোনো পুরুষের কাছে বিয়ে বসতে পারবে না। আর ইসলামি শরিয়তে, স্বামী ডিভোর্সের পরই বিয়ে করতে পারবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।