লাইফস্টাইল ডেস্ক : ইতিমধ্যে দেশের সব বাজারে গাছপাকা রসালো আম ওঠা শুরু হয়েছে। আম ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, রাজশাহী বা চুয়াডাঙ্গার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুপরিচিত নানা জাতের আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশে এপ্রিল মাস থেকেই কাঁচা আম পাওয়া গেলেও মে মাস থেকে পাকা আম আসতে শুরু করে। জুলাই বা অগাস্ট পর্যন্ত দেশীয় আম পাওয়া যায়।
তবে আম যে শুধুমাত্র তার স্বাদের জন্য অনন্য, তা নয়। এই ফলটি বিশেষ পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ। কিন্তু পুষ্টিগুণ থাকা সত্ত্বেও অনেকেই আছেন, যারা আম খেতে পারেন না। কারণ আমে প্রাকৃতিকভাবেই চিনির পরিমাণ বেশি। তাই এটি খেলে মানুষের শরীরের স্যুগারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
একজন মানুষ দিনে কতটুকু আম খেতে পারবেন তা নির্ভর করে তার শারীরিক পরিস্থিতি কেমন, তার উপর।
আমের পুষ্টিগুণ
পাকা আমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, শর্করা, আমিষ, ভিটামিন এ, বিটা ক্যারটিন, পটাশিয়াম ইত্যাদি থাকে। তাই, কাঁচা আমের তুলনায় আঁশযুক্ত পাকা আম শরীরের জন্য বেশি ভালো। এছাড়া পাকা আমে পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশ জাতীয় উপাদান পেকটিন থাকে, যা পাকস্থলিতে থাকা খাদ্যকে ভালোভাবে পরিপাক হতে সাহায্য করে।
আমের বিশেষ কিছু এনজাইম খাদ্য উপাদানের প্রোটিনকে ভালোভাবে ভেঙে ফেলতে কাজ করে। যা সামগ্রিকভাবে পরিপাক ক্রিয়ায় অবদান রাখে। আমে থাকা ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও অন্যান্য ২৫ ধরনের ক্যারোটেনয়েডস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে, আমে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে ও চোখের চারপাশের শুষ্কভাবও দূর করে।
এছাড়া আমে প্রচুর বিচাক্যরটিন থাকায় এবং ভিটামিন এ, ই থাকায় আমাদের স্কিন খুব ভালো রাখে এবং এটি খেলে চোখের দৃষ্টি শক্তিও ভালো থাকে। ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে আম।
অন্যদিকে কাঁচা আম দেহের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। লিভারের সমস্যায় কাঁচা আম উপকারী। এটি বাইল এসিড নিঃসরণ বাড়ায়। অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকে পরিষ্কার করে। দেহে নতুন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে।
সবমিলিয়ে, আমে থাকা নানা ধরনের পুষ্টি উপাদানের জন্য এটি উপরে উল্লিখিত বিষয়ের বাইরেও খসখসে চামড়া, চুলপড়া, হজমের সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। একাধারে অতুলনীয় স্বাদ ও একাধিক পুষ্টিগুণের কারণেই একে ফলের রাজা বলা হয়।
দৈনিক কতটুকু আম খাওয়া উচিৎ?
একজন মানুষের শারীরিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে যে ওই ব্যক্তি কতটুকু আম খেতে পারবেন, কতটুকু পারবেন না।
এ বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেন, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ অনায়াসেই দৈনিক দু’টো আম খেতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে, ফজলি আম খাওয়াটা বেশি ভালো। কারণ ফজলি আমে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, বিটা ক্যারোটিনের পরিমাণ অনেক।
তবে যারা কিডনি বা ডায়াবেটিসের রোগী, তাদের আম খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ পুষ্টিবিদদের।
চিকিৎসকরা বলছেন, আমে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তাই কিডনি রোগীদের পুষ্টিবদের সাথে পরামর্শ করে আম খাওয়া উচিৎ।
এক কাপ আমে প্রায় ৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে, সেহেতু অন্য কোনও জটিলতা না থাকলে একজন সুস্থ মানুষ ওই পরিমাণ আম খেতেই পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।