বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : সূর্যগ্রহণ নিয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। মহাজাগতিক এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে চান অনেকেই। এ নিয়ে রয়েছে অসংখ্য কুসংস্কারও। কেউ কেই ভাবেন গ্রহণ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে। আসলে কিন্তু তা নয়, সূর্যগ্রহণ বৈজ্ঞানিক ঘটনা। প্রকৃতির নিয়মেই সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ হয়।
সূর্যগ্রহণ কেন হয়?
চাঁদ যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবীর কোন দর্শকের কাছে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায় । এই ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ বলা হয়।
সূর্যগ্রহণ কত প্রকার?
সাধারণত চার ধরনের সূর্যগ্রহণ হয়। এগুলো হলো- মোট, আংশিক, সংকর এবং বৃত্তাকার। এগুলোকে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ, বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ, হাইব্রিড সূর্যগ্রহণ এবং আশিংক সূর্যগ্রহণও বলা হয়।
মানুষ যে ধরনের গ্রহন দেখতে পায় তা নির্ভর করে চাঁদ কীভাবে পৃথিবী এবং সূর্যের সাথে সারিবদ্ধ হয় এবং চাঁদ পৃথিবী থেকে কত দূরে।
পূর্ণ গ্রাস সূর্যগ্রহণ কাকে বলে?
যখন সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ একটি সমান্তরাল রেখার মধ্যে অবস্থান করে এবং চাঁদ সম্পূর্ণভাবে সূর্যকে ঢেকে ফেলে এই ঘটনাকে বলে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। তখন কিছু সময়ের জন্য আকাশ পুরোপুরি রাতের আকাশের মতো অন্ধকার হয়ে যায়।
বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ কাকে বলে?
যখন চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলে না এবং সূর্যের বাহিরের অংশ বলয় অথবা আংটির মতো দেখা যায় এই অবস্থাকে বলয়গ্রাস গ্রহণ বলা হয়। এই গ্রহণ হওয়ার মূল কারণ হলো চাঁদ পৃথিবী থেকে দূরে থাকে এবং চাঁদকে তুলনামূলক ছোট দেখায়, তাই তা পুরো সূর্যকে ঢাকতে পারে না। সূর্যের পূর্ণগ্রাস গ্রহণের মতই বলয়গ্রাসের সময়ও একটা ছায়া ফেলা পথ তৈরি হয়। এই পথের মধ্যে পৃথিবীর যেসব অঞ্চল, সেখান থেকে বলয়গ্রাস গ্রহণ দেখা যায়। আগামীতে ২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর তারিখে সূর্যের বলয়গ্রাস গ্রহণ হবে। এটি উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু কিছু জায়গা থেকে দেখা যাবে।
মিশ্র সূর্যগ্রহণ গ্রহণ
যখন কোনো সূর্যগ্রহণ পূর্ণগ্রাস দিয়ে শুরু হয় এবং পৃথিবীর নিজ অবস্থান থেকে সরে যায় এই সময়কে মিশ্রগ্রহণ বা হাইব্রিড এক্লিপ্স বলা হয়। এটি খুবই বিরল ঘটনা বলে জানিয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক সংস্থা আইএসি। সংস্থাটি বলছে, সব সূর্যগ্রহণের মাত্র ৪% হয় মিশ্র ধরনের। আগামী ২০২৩ সালের ২০ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া আর পাপুয়া নিউ গিনি থেকে এই সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে।
হাইব্রিড সূর্যগ্রহণ কী?
হাইব্রিড সূর্যগ্রহণের আরেক নাম রিং অ ফায়ার। ১৮ মাস পর পর একটি করে সূর্যের পূর্ণগ্রাস গ্রহণ হয় । এই সময় সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে দেয় চাঁদ। সূর্যের নানারকমের গ্রহণ হয়। কখনও আংশিক ঢাকা পড়ে সূর্য। কখনও পুরোপুরি ঢাকা পড়ে যায় সূর্য যাকে বলে পূর্ণগ্রাস। আবার কখনও বলয়গ্রাস হয় , যা পরিচিত ‘রিং অব ফায়ার’ নামে। আর যদি তিনরকমই গ্রহণ একসঙ্গে ঘটে, তখন তাকে বলে হাইব্রিড গ্রহণ।
আংশিক সূর্যগ্রহণ
যে সময় চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢাকতে পারে না, সেই সময়ে সূর্যকে আমরা অর্ধচন্দ্রাকার আকারে দেখতে পাই। যায়। সূর্যের একটি অংশ অন্ধকার ছায়ায় ঢেকে যায়, তাকেই বলে আংশিক সূর্য গ্রহণ বলে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।