লাইফস্টাইল ডেস্ক : শিশুর বেড়ে ওঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো তাকে ধীরে ধীরে আলাদা ঘুমানোর অভ্যাস করানো। কিন্তু অনেক অভিভাবকই জানেন না ঠিক কোন বয়স থেকে শিশুকে আলাদা শোয়ানো উচিত। শিশুর মানসিক এবং শারীরিক বিকাশের জন্য এ সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শিশুর নিরাপত্তা, ঘুমের মান এবং স্বাবলম্বিতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়।
কেন শিশুকে আলাদা শোয়ানো জরুরি?
শিশুর স্বাবলম্বিতা, আত্মবিশ্বাস, এবং নিজস্বতা বিকাশের জন্য আলাদা ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। এটি তার ঘুমের মান উন্নত করে এবং ভবিষ্যতে তার আত্মনির্ভরশীলতার বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও, শিশুকে আলাদা শোয়ানো পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ঘুমের গুণমান বজায় রাখার ক্ষেত্রেও সহায়ক।
শিশুকে কখন আলাদা শোয়ানো উচিত?
৬ মাস থেকে ১ বছর:
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর প্রথম ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত বাবা-মায়ের সাথে একই ঘরে থাকা উচিত, তবে আলাদা বিছানায়। এই সময়ে শিশুর নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে হঠাৎ শিশু মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে এই পদ্ধতি কার্যকর।
২-৩ বছর বয়স:
২-৩ বছর বয়স থেকেই ধীরে ধীরে শিশুকে আলাদা শোয়ানো শুরু করা যেতে পারে। এ সময় শিশুর মানসিক এবং শারীরিক বিকাশ হয় এবং সে ধীরে ধীরে নিজের স্বাধীনতা উপলব্ধি করতে শেখে। যদি এ সময় শিশুকে আলাদা শোয়ানো হয়, তবে শিশুর মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং স্বাবলম্বিতার বিকাশ হয়।
৪-৫ বছর বয়স:
৪-৫ বছর বয়সে শিশুরা তাদের নিজের ঘর এবং বিছানায় থাকতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তারা এ সময় নিজেদের জন্য আলাদা জায়গা তৈরি করতে চায় এবং স্বাধীনভাবে থাকতে শিখতে শুরু করে। তাই এই বয়সে শিশুকে সম্পূর্ণ আলাদা শোয়ানো খুবই কার্যকর হতে পারে।
কীভাবে শিশুকে আলাদা ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত করবেন?
১. প্রথমে আলাদা বিছানা দিন: প্রথমে শিশুকে তার নিজের বিছানায় ঘুমাতে উৎসাহিত করুন, যদিও সেই বিছানাটি আপনার ঘরেই থাকে। এতে শিশুর নিরাপত্তা এবং সান্নিধ্য বজায় থাকবে।
২. আস্তে আস্তে দূরে সরান: শিশুকে একেবারে আলাদা ঘরে নিয়ে না গিয়ে প্রথমে ধীরে ধীরে নিজের ঘর থেকে একটু দূরে রাখুন। এতে শিশুর অভ্যস্ত হওয়া সহজ হবে।
৩. শান্ত পরিবেশ তৈরি করুন: শিশুকে আলাদা ঘুমাতে অভ্যস্ত করাতে ঘুমানোর আগে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করুন। গল্প শোনানো বা ঘুমের আগে কোনো রুটিন তৈরি করা ভালো হতে পারে।
৪. সময়ের ব্যাপারে ধৈর্য ধরুন: কিছু শিশু হয়তো খুব দ্রুত আলাদা ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবে না। তাই এই ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরুন এবং ধীরে ধীরে শিশুকে অভ্যস্ত করুন।
শিশুকে আলাদা শোয়ানোর উপযুক্ত সময় এবং পদ্ধতি পরিবারের জীবনধারা, শিশুর মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য এবং অভিভাবকদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত ২ থেকে ৫ বছরের মধ্যে শিশুকে আলাদা শোয়ানো শুরু করা সঠিক বলে মনে করা হয়। তবে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় শিশুর স্বাচ্ছন্দ্য এবং পরিবারের পরিস্থিতি বিবেচনা করা উচিত।
সূত্র: জীবনস্টাইল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।