জুমবাংলা ডেস্ক : সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের ১৮ বছরের বেশি বয়সী সব নাগরিককে পেনশন সুবিধার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এই পেনশন ব্যবস্থায় অংশ নিতে পারবেন প্রবাসীরাও। এর মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটি নাগরিককে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
মোট ৬টি পেনশন স্কিমের মধ্যে আজ চালু করা হয়েছে ৪টি স্কিম। বাকি ২টি পরবর্তীতে চালু করা হবে। সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন ব্যবস্থা থাকায় তাঁরা এই সর্বজনীন স্কিমের আওতাভুক্ত নয়।
প্রবাস স্কিম
প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য এই স্কিম প্রযোজ্য হবে। বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক তফসিলে বর্ণিত চাঁদার সমপরিমাণ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রায় প্রদান করে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
এই স্কিমের আওতায় কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ৭ হাজার ৬৫১ টাকা পেনশন পাবেন। আবার কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ৭ হাজার ৫০০ টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ১১ হাজার ৪৭৭ টাকা পেনশন পাবেন। কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ১৫ হাজার ৩০২ টাকা করে পেনশন পাবেন।
প্রগতি স্কিম
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য এই স্কিম। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক তফসিলে বর্ণিত হারে চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এই স্কিমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার ৫০ শতাংশ কর্মচারী ও অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান প্রদান করিবে। তবে কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই স্কিমে অংশগ্রহণ না করলে, সেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী নিজ উদ্যোগে এককভাবে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
এই স্কিমের আওতায় কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ৩ হাজার ৬০ টাকা পেনশন পাবেন। আবার কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ৪ হাজার ৫৯১ টাকা পেনশন পাবেন। কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ৭ হাজার ৬৫১ টাকা করে পেনশন পাবেন।
সুরক্ষা স্কিম
স্বকর্ম ও অ-প্রাতিষ্ঠানিক কর্মীদের জন্য এই স্কিম। অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ যেমন- কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, ইত্যাদি তফসিলে বর্ণিত হারে চাঁদা প্রদান করে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
এই স্কিমের আওতায় কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ১ হাজার ৫৩০ টাকা পেনশন পাবেন। আবার কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ৩ হাজার ৬০ টাকা পেনশন পাবেন। কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ৪ হাজার ৫৯১ টাকা করে পেনশন পাবেন। কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ৭ হাজার ৬৫১ টাকা করে পেনশন পাবেন।
সমতা স্কিম
স্বল্প আয়ের ব্যক্তিদের জন্য এই স্কিম। আয় সীমার ভিত্তিতে দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ব্যক্তিরা (যাদের বর্তমান আয় বাৎসরিক ৬০ হাজার টাকার কম) তফসিলে বর্ণিত হারে চাঁদা প্রদান করে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারিবেন।
এই স্কিমের আওতায় কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে ১০ বছর চাঁদা দিলে এরপর থেকে তিনি প্রতি মাসে ১ হাজার ৫৩০ টাকা করে পাবেন। এক্ষেত্রে জমা দেওয়া ১ হাজার টাকার মধ্যে ব্যক্তি দেবেন ৫০০ টাকা এবং সরকার দেবে ৫০০ টাকা।
আজ বৃহস্পতিবার থেকেই অনলাইন ফরম পূরণ অথবা সরাসরি সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে নিবন্ধন করা যাবে এবং চাঁদা দেওয়া যাবে। মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও চাঁদা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। মাসে চাঁদা দেওয়া যাবে ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। পেনশন সুবিধা পেতে কমপক্ষে ১০ বছর টাকা জমা দিতে হবে।
স্কিমে অংশ নিতে পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর এবং ই-মেইল ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।