বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : এ গবেষণায় পৃথিবীর ওপরের অংশের ভূত্বকে নজর দিয়েছেন গবেষকরা। কারণ এই অঞ্চলটি তুলনামূলক ভঙ্গুর হওয়ায় এখানে এমন ভঙ্গুর শিলা থাকার সম্ভাবনা আছে, যা পানি ধরে রাখতে পারে।
ভূপৃষ্ঠের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ জুড়ে পানি থাকলেও বড় প্রশ্ন হল, ভূগর্ভে আসলে কী পরিমাণ পানি লুকিয়ে আছে?
২০২১ সালে ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর বরফ ও হিমবাহের তুলনায় বেশিরভাগ পানি মাটির নীচে বা পাথরের ছিদ্রগুলোতে লুকিয়ে আছে, যা ‘ভূগর্ভস্থ পানি’ হিসেবে পরিচিত।
“ভূপৃষ্ঠের নিচে প্রায় চার কোটি ৩৯ লাখ ঘন কিলোমিটার পানি আছে,” বলেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ সাসকাচোয়ান’-এর হাইড্রোজোলজিস্ট ও এ গবেষণার মূল লেখক গ্র্যান্ট ফার্গুসন।
এর মধ্যে প্রায় দুই কোটি ৭০ লাখ ঘন কিলোমিটার পানি ধারণ করে আছে অ্যান্টার্কটিকার বরফ। আর গ্রিনল্যান্ডে আছে ৩০ লাখ ঘন কিলোমিটার পানি। এ ছাড়া, অ্যান্টার্কটিকা ও গ্রিনল্যান্ডের বাইরের হিমবাহ প্রায় এক লাখ ৫৮ হাজার ঘন কিলোমিটার পানি ধারণ করে আছে বলে উল্লেখ রয়েছে গবেষণায়।
২০২১ সালের সমীক্ষা অনুসারে, ভূপৃষ্ঠে বৃহত্তম পানির উৎস হিসাবে বিবেচনা করা হয় মহাসাগরগুলোকে, যেখানে পানির পরিমাণ ১৩০ কোটি ঘন কিলোমিটার। আর ভূগর্ভস্থ পানিকে গোটা বিশ্বে পানির সবচেয়ে বড় উৎস হিসেবে উল্লেখ করা হয় এ গবেষণায়।
২০১৫ সালে ‘নেচার জিওসায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় ধারণা করা হয়েছিল, পৃথিবীর অগভীর ভূগর্ভস্থ এলাকায় দুই কোটি ২৬ লাখ ঘন কিলোমিটার পানি আছে। এর বিপরীতে, ভূত্বকের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা পানিকেও ভূগর্ভস্থ পানি হিসেবে বিবেচনা করা হয় ২০২১ সালের গবেষণায়।
এর কারণ হল, আগের ধারণাগুলোয় শুধু ভূপৃষ্ঠের প্রায় দুই কিলোমিটারের মধ্যের পানিই ভূগর্ভস্থ পানি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল, যেখানে মনোযোগ দেওয়া হয়েছিল গ্রানাইটের মতো কম ছিদ্রওয়ালা স্ফটিক শিলার দিকে।
তবে, ২০২১ সালের গবেষণায় পাললিক শিলাও অন্তর্ভূক্ত করা হয়, যেগুলোতে স্ফটিক শিলার তুলনায় বেশি ছিদ্র থাকে।
সব মিলিয়ে ২০২১ সালের সমীক্ষায় দেখা যায়, ভূপৃষ্ঠের নিচে প্রায় দুই থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে দুই কোটি তিন লাখ ঘন কিলোমিটার পর্যন্ত পানি থাকতে পারে, যা আগের ধারণার দ্বিগুণেরও বেশি।
নতুন অনুমান বলছে, পৃথিবীতে অগভীর ভূগর্ভস্থ পানির পরিমাণ প্রায় দুই কোটি ৩৬ লাখ ঘনকিলোমিটার।
ফার্গুসন বলেছেন, ধারণা করা হয়, ভূত্বক ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরু। তবে ২০২১ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, ভূত্বকের প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিদ্র তুলনামূলক কম থাকায় এতে পানি থাকার সম্ভাবনাও বেশি।
এ গবেষণায় পৃথিবীর ওপরের অংশের ভূত্বকে নজর দিয়েছেন গবেষকরা। কারণ এই অঞ্চলটি তুলনামূলক ভঙ্গুর হওয়ায় এখানে এমন ভঙ্গুর শিলা থাকার সম্ভাবনা আছে, যা পানি ধরে রাখতে পারে।
বাজারে লঞ্চ হল Nothing Phone 2a, জেনে নিন দাম এবং স্পেসিফিকেশন
ভূগর্ভস্থ অগভীর জলাভূমির বেশিরভাগই মিঠা পানি, যেগুলো পানযোগ্য ও সেচের মতো কাজে ব্যবহার করা হয়। এর বিপরীতে, গভীর ভূগর্ভস্থ পানি লবণাক্ত হওয়ার পাশাপাশি সেগুলো সহজে প্রবাহিত হতে পারে না। ফলে, এগুলো পৃথিবীর বাকি অংশের পানির সঙ্গে মিশতে পারে না বলে জানিয়েছেন ফার্গুসন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।