লাইফস্টাইল ডেস্ক : বর্তমান যুগে শিশুরা মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট ও টিভির প্রতি প্রবল আকর্ষণ অনুভব করে। অবসর সময়ে তারা এই গ্যাজেটগুলোতেই মত্ত থাকে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করা অভিভাবকদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে একটু চেষ্টা করলে এই অভ্যাস গড়ে তোলা সম্ভব।
পারিবারিক সময় ও গল্প বলার গুরুত্ব
একসময় যৌথ পরিবারে বড় হওয়া শিশুরা দাদু-দাদির কাছ থেকে গল্প শুনতে শুনতে বড় হতো। তাদের কল্পনাশক্তি বিকাশের সুযোগ পেত। কিন্তু বর্তমান একক পরিবারে সেই সুযোগ অনেক কমে গেছে। তাই বাবা-মাকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে।
সন্ধ্যার পর পরিবারের সবাই মিলে গল্পের আসর বসাতে পারেন। এতে শিশুদের কল্পনাশক্তি যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি বই পড়ার প্রতি আগ্রহও বাড়বে।
ছবিযুক্ত রঙিন বই
শিশুরা ছবি ও রঙিন জিনিসের প্রতি আকৃষ্ট হয়। তাই তাদের প্রথমে ছবিযুক্ত রঙিন বই কিনে দিন।
এতে ফুল, ফল, পাখি, জীবজন্তুর ছবি থাকা উচিত। শিশুকে বাইরে নিয়ে গেলে এসব বাস্তব জিনিস দেখিয়ে বাড়ি ফিরে বইয়ে সেই জিনিস খুঁজে বের করতে বলুন। এতে তাদের শেখার প্রক্রিয়া সহজ হবে।
কার্টুন ও রূপকথার গল্প
শিশুরা যেসব কার্টুন দেখতে ভালোবাসে, সেগুলোর উপর ভিত্তি করে বই কিনে দিন। রূপকথার গল্প যেমন স্নো হোয়াইট, সিনড্রেলা বা জাঙ্গল বুকের বই কিনে দিতে পারেন।
এতে সুন্দর সুন্দর ছবি থাকে যা শিশুরা পছন্দ করে। এভাবে টিভি ও মোবাইলের বাইরে তাদের একটি নতুন জগত তৈরি হবে এবং ভাষার দক্ষতাও বাড়বে।
নীতিকথার গল্প
শিশুদের মধ্যে নৈতিক শিক্ষা ও ভালো-মন্দের বোধ গড়ে তোলার জন্য ইশপের গল্প, পঞ্চতন্ত্র বা অন্যান্য নীতিকথার বই কিনে দিন। এসব গল্পের মাধ্যমে তারা সঠিক-ভুলের শিক্ষা পাবে।
বইয়ের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি
শিশুরা বড় হতে থাকলে তাদের নানা বিষয়ে কৌতূহল বাড়তে থাকে। তাদের প্রশ্ন শুনে বুঝুন কোন বিষয়ে তাদের আগ্রহ বেশি। সেই অনুযায়ী সাধারণ জ্ঞান, ইতিহাস বা বিজ্ঞানের বই কিনে দিন। মাঝেমধ্যে বুকস্টোরে নিয়ে গিয়ে তাদের পছন্দমতো বই কিনতে দিন।
রাতে গল্প শোনানোর অভ্যাস
প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বই থেকে গল্প পড়ে শোনান। এতে শিশুরা বইয়ের প্রতি আগ্রহী হবে এবং নিজেরাই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলবে। গল্প শোনানোর পর কোন গল্প ভালো লেগেছে তা জানতে চান। এতে আপনি বুঝতে পারবেন তারা বই পড়তে উপভোগ করছে কিনা।
পড়ার বইয়ের পাশাপাশি গল্পের বই
শিশুর পড়ার টেবিলে বা র্যাকে শুধুমাত্র পড়ার বই না রেখে মজার গল্পের বই বা কমিকস রাখুন। পড়ার ফাঁকে রিল্যাক্স করতে চাইলে এসব বই পড়তে পারে। এতে মোবাইল বা টিভির প্রতি আসক্তি কমে যাবে।
উপহার হিসেবে বই
বাচ্চার জন্মদিন বা বিশেষ কোনো উপলক্ষে বই উপহার দিন। উপহারের তালিকায় অবশ্যই বই রাখুন। এতে তারা বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলবে।
শিশুরা বইয়ের জগতে হারিয়ে যাক, এটা তাদের জন্য সবচেয়ে বড় উপহার হতে পারে। তাদের কল্পনাশক্তি ও জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে বইয়ের মাধ্যমে। তাই আজ থেকেই শিশুকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং তাদের জীবনে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।