লাইফস্টাইল ডেস্ক : অনেকটা সময় বাইরে রোদে ঘোরাঘুরি করার ফলে দূষণে ত্বক নির্জীব আর মলিন হয়ে পড়ে। তাই ত্বকের প্রয়োজন বাড়তি যত্নের। শুধু মেকআপ করে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। ত্বকের ভেতর থেকে সমস্যা দূর করতে হবে।
অনেকে ত্বকের যত্নে নিয়মিত ফেসিয়াল করেন। পার্লারগুলোতে ফেসিয়াল করতে হলে গুনতে হয় অনেক টাকা। আবার ব্যস্ততার কারণে ফেসিয়াল করতে পার্লারে যাওয়া হয় না অনেকের। তাই ঘরেই ফেসিয়াল করতে পারেন।
ধাপে ধাপে, সঠিক উপায় ও উপকরণে ফেসিয়ালের টিপস জানালেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী আফরিন মৌসুমি, লিখেছেন ফারিয়া এজাজ
১. ক্লিনজিং : সব ধরনের ত্বকের জন্য টক দই খুব ভালো একটি ক্লিনজার। টক দই একটি পাত্রে ভালো করে ফেটিয়ে, সঙ্গে কর্পূর মিশিয়ে ত্বকে ক্লিনজারের মতো ম্যাসাজ করে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিন।
২. হট স্টিমিং : তৈলাক্ত ত্বক এবং যাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা রয়েছে তাদের ত্বকে হট স্টিম ভালো কাজ করে। শুষ্ক ত্বকে কখনোই হট স্টিম ব্যবহার করা যাবে না।
এতে ত্বকের উপরিভাগের সিবাম গ্ল্যান্ড খুলে যায়, আর নিচে মেলানিন জমাট বেঁধে যায়। মেলানিন জমাট বেঁধে মুখে মেছতার সমস্যা তৈরি করে। ত্বকে ব্রণের সমস্যা থাকলেও হট স্টিম ব্যবহার করবেন না। সে ক্ষেত্রে তিন-চারটি লবঙ্গ পেস্ট করে নিয়ে ময়দার সঙ্গে ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।
৩. স্ক্রাবিং : স্ক্রাব হিসেবে চালের গুঁড়া বেশ উপকারী। সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যায়। চালের গুঁড়ার উপাদান খুব মাইল্ড হওয়ায় ত্বকের সঙ্গে সহজেই মিশে যায়। কুসুম গরম দুধে চালের গুঁড়া কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে তাতে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে আলতোভাবে পুরো ত্বকে লাগিয়ে নিন।
কুসুম গরম থাকা অবস্থায় ত্বকে ভালো কাজ করে। ঘরে ফেসিয়াল করলে স্ক্রাবিংয়ের সময় মেশিন ব্যবহারের সুযোগ থাকে না অনেকের। এ জন্য টক দই বা দুধ যা-ই ব্যবহার করা হোক, গরম অবস্থায় ত্বকের জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া মরে যায়।
৪. ফেসপ্যাক : ঘরে ফেসিয়াল করার জন্য যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন। ত্বকের ধরন বুঝে উপাদান বেছে নিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে নিন। ভুল উপাদান ব্যবহারে ত্বকে র্যাশ হতে পারে। সামান্য পরিমাণ হাতের ত্বকে লাগিয়ে একটু অপেক্ষা করুন। জ্বালাপোড়া ও র্যাশ উঠে ত্বক বিবর্ণ না হলে উপাদানটি আপনার ত্বকের উপযোগী।
তৈলাক্ত ত্বক
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ভালো উপকরণ মুলতানি মাটি। দোকানেই কিনতে পাবেন মুলতানি মাটি। পানি দিয়ে মুলতানি মাটি গুলিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকে দাগছোপ থাকলে মুলতানি মাটির সঙ্গে আলু বা টমেটোর রস নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
শুষ্ক ত্বক
শুষ্ক ত্বকের জন্য যেকোনো ধরনের ফল ফেসপ্যাক হিসেবে ভালো কাজ করে। সহজলভ্য এবং সাধ্যের মধ্যে পাওয়া সম্ভব, সেগুলোই ব্যবহার করতে পারেন। চিনাবাদাম পাঁচ মিনিট ভিজিয়ে রেখে পেস্ট করে তার সঙ্গে সামান্য কেউলিন পাউডার মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের মৃত কোষ উঠে যাবে, উজ্জ্বলতা বাড়বে।
মিশ্র ত্বক
মিশ্র ত্বকের ক্ষেত্রে শঙ্খ পাউডার ভালো ফেসপ্যাক। শঙ্খ পাউডার, হরীতকী পাউডার এবং গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণটি ত্বকে লাগাতে পারেন। ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
৫. টোনিং : এক কাপ গোলাপজলের সঙ্গে এক টেবিল চামচ গ্লিসারিন এবং এক চিমটি পরিমাণ কর্পূর মিশিয়ে মিশ্রণটি দিয়ে ত্বক টোনিং করে নিতে পারেন। কর্পূর ব্যবহার করলে সহজে এই মিশ্রণটি নষ্ট হবে না।
৬. ময়েশ্চারাইজিং : সব শেষে ত্বকে অবশ্যই একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকে ওয়াটারবেজড ময়েশ্চারাইজার, শুষ্ক ত্বকে তেলের ঘনত্ব বেশি এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো। এক কাপ অ্যালোভেরা জেল, দুই টেবিল চামচ গ্লিসারিন এবং দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে ময়েশ্চারাইজার বানাতে পারেন। এই ময়েশ্চারাইজার লম্বা সময় ধরে ভালো রাখতে তিন-চারটি ভিটামিন ‘সি’ ট্যাবলেট খুব ভালোভাবে গুঁড়া করে মিশিয়ে নিতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।