লাইফস্টাইল ডেস্ক : মানুষের জীবনে প্রতিদিন বিভিন্নজনের সঙ্গে কথোপকথন করতে হয়। আর মাঝে মাঝে এই কথোপকথন বাদানুবাদের দিকে গড়াতে পারে। মতভেদ বা তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়া খুবই স্বাভাবিক, তবে যখন আলোচনা অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনায় রূপ নেয়, তখন সেটির সমাধান করা ও শান্ত পরিবেশ বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শান্তভাবে বাদানুবাদে ইতি টানার কিছু কার্যকর পদ্ধতি রয়েছে, যা আপনাকে মানসিক শান্তি বজায় রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
ধৈর্য ধরুন ও শোনার ক্ষমতা বাড়ান
যখন কথোপকথন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, তখন উত্তেজনার পরিবর্তে ধৈর্য ধরে অন্যপক্ষের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যপক্ষের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিয়ে শুনলে তাদের মনোভাব বুঝতে সহজ হয় এবং তাদের কাছে আপনার শান্ত আচরণের প্রমাণ যায়। আপনি যখন মনোযোগ দিয়ে শোনেন, তখন অন্যপক্ষেরও নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ হয়, যা তর্কের তীব্রতা কমায়।
ইগো বাদ দিয়ে সমাধান খুঁজুন
বিরোধ বা তর্কে অনেক সময়ই ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ইগোর কারণে সমস্যা আরো ঘনীভূত হয়।
তাই ইগো বাদ দিয়ে সমাধান খোঁজার দিকে মনোযোগ দিন। সব সময় মনে রাখবেন, আপনার মূল লক্ষ্য সমস্যার সমাধান বের করা, না যে কে সঠিক বা কে ভুল। এটি দ্বন্দ্ব মীমাংসার সবচেয়ে কার্যকর কৌশলগুলোর একটি।
কথোপকথনের সুর পরিবর্তন করুন
তর্কে উত্তপ্ত আবহাওয়া পরিবর্তনের অন্যতম কার্যকর উপায় হলো কথোপকথনের সুর বা ভাষা পরিবর্তন করা। যদি মনে হয় যে উত্তেজনা বেড়ে যাচ্ছে, তাহলে আলোচনাকে অন্য প্রসঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, রসবোধ বা বিনয়ের মাধ্যমে আলাপের ভিন্ন দিক তুলে ধরতে পারেন, যা উত্তেজনা কমিয়ে দেয়।
নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন
তর্কে জড়িয়ে গেলে নিজস্ব আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। যদি আপনি নিজের মেজাজ হারিয়ে ফেলেন, তাহলে পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে যেতে পারে। তাই স্বল্প কথা বলা, গভীর শ্বাস নেওয়া বা এক মুহূর্তের জন্য বিরতি নেওয়া আবেগ নিয়ন্ত্রণের চমৎকার উপায় হতে পারে। আপনি শান্ত থাকলে, অন্যপক্ষও উত্তেজনা থেকে দূরে থাকতে পারে।
সম্মান বজায় রাখুন
তর্ক চলাকালীন আপনি যে যতটা সম্ভব সম্মান প্রদর্শন করবেন, ততটাই শান্ত পরিবেশ বজায় রাখতে সক্ষম হবেন। ব্যক্তিগত আক্রমণ বা অবমাননাকর কথাবার্তা বাদ দিয়ে বিরোধ মীমাংসার চেষ্টা করুন। সম্মানজনক আচরণ সবার মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং এটি আলোচনার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
‘স্যরি’ বলার সাহস রাখুন
মাঝে মাঝে তর্কের উত্তেজনা থেকে দূরে যেতে হলে স্যরি বলা অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি। আপনি যদি নিজে কোনো ভুল করেন বা কিছু ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়, তাহলে স্যরি বললে সেটা আলোচনাকে স্থিরভাবে শেষ করার উপায় হতে পারে। এটি আপনাকে আরো দায়িত্বশীল এবং পরিণত মানুষ হিসেবে তুলে ধরে।
অবস্থান থেকে সরে আসুন, প্রয়োজনে বিরতি নিন
কিছু পরিস্থিতিতে বিরতি নেওয়া বা একদমই আলোচনার স্থান ছেড়ে দেওয়া ভালো হতে পারে। এটি আপনাকে এবং অন্যপক্ষকে শান্ত হওয়ার জন্য সময় দেবে। পরে যখন পরিস্থিতি শান্ত হবে, তখন আবার আলোচনায় ফিরে আসা যেতে পারে।
সমাধানের দিক নির্দেশ করুন
যদি তর্ক শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ না থাকে, তাহলে আপনি নিজে থেকেই সমাধানের দিকে নজর দিতে পারেন। অন্যপক্ষকে বোঝান যে বিরোধ মীমাংসার দিকে এগোলে সবাই শান্তিপূর্ণ সমাধান পেতে পারে।
কথোপকথন যখন বাদানুবাদের দিকে চলে যায়, তখন তাতে ইতি টানার জন্য সংযম, বুদ্ধিমত্তা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উত্তপ্ত আলোচনা বা বিরোধকে শৃঙ্খলাপূর্ণভাবে সমাধান করা শুধু পরিস্থিতি শান্ত রাখার নয়, বরং সম্পর্ক রক্ষারও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।