স্বাস্থ্য ডেস্ক : মানুষ যাত্রাপথে স্বাভাবিক অবস্থার থেকে যদি গতির পরিবর্তন করে, তখন তার মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখা দেয়। যেমন- মাথা ঘোরানো বা মাথা চক্কর দিয়ে উঠা, বমি ভাব বা বমি হওয়া। সহজ ভাষায় যা মোশন সিকনেস (Motion sickness) নামে পরিচিত। মানুষ নিজের স্বাভাবিক চলাচল পরিবর্তন করে যখন গতি বাড়ায় যেমন- নৌকা, গাড়ি, ট্রেন, বিমানের ভ্রমণ করে। তখন শরীরের ইন্দ্রিয়গুলোর মাধ্যমে মস্তিষ্কে বিভিন্ন সংকেত পৌঁছায়। সেই সময় যদি ইন্দ্রিয়গুলো পরস্পর বিপরীতমুখী বা পরস্পর বিরোধী বার্তা গ্রহণ করে সমন্বয় হয়ে পড়ে, তখনই মোশন সিকনেস দেখা দেয়। মূলত চোখ ও অভ্যন্তরীণ কর্নের সম্বন্বয়হীনতাই এই সিকনেসের জন্য দায়ী।
মোশন সিকনেসের লক্ষণ
১. যাত্রা পথে বমি বমি ভাব হওয়া।
২. শরীর থেকে ঘাম বের হওয়া।
৩. মাথা ঘোরা ও অস্বস্তি লাগা।
৪. মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া।
৫. মাথা ব্যথা করা।
৬. ভয় লাগা।
তবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই মোশন সিকনেস সাময়িক বা ক্ষণস্থায়ী হয়ে থাকে। যাত্রা শেষ হওয়ার পর এই সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু যাত্রা বা ভ্রমণ শেষ হওয়ার কয়েকদিন পরও যদি এই উপসর্গগুলো ভোগায়, তবে অবশ্যই নাক–কান–গলা বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।
তবে, আপনি যদি ভ্রমণের পূর্বেই কিছু প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন, তবে ভ্রমণের আনন্দ নষ্ট হবে না। যেমন:
১. বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে মোশন সিকনেসের বিরোধী ঔষধ খেতে পারেন।
২. ভ্রমণে পত্রিকা, বই বা ম্যাগাজিন পড়া থেকে বিরত থাকুন।
৩. মনকে শান্ত রাখুন। প্রয়োজনে চুইংগাম চিবাতে থাকুন।
৪. ভ্রমণ সঙ্গীদের মধ্যে যাদের মোশন সিকনেস হয়, এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।
৫. ভ্রমণের সময় রাখতে পারেন আদার টুকরো। যাত্রাকালে মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে খেতে পারেন লেবু চা।
৬. বমি বমি লাগছে, এ কথা ভুলেও চিন্তা করবেন না। আশেপাশের ভ্রমণ সঙ্গীদের সঙ্গে কথা বলে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।
৭. জানালা দিয়ে বাইরে না তাকিয়ে সামনের দিগন্তের দিকে চেয়ে থাকুন। প্রয়োজনে সামনের সিটে বসুন। কখনও গাড়ির উলটো দিকে বসবেন না।
৮. প্রয়োজনে চোখ বন্ধ রাখুন, গান শুনুন, কিংবা ঘুমের প্রস্তুতি নিন।
৯. টকজাতীয় কিছু খাবার সঙ্গে রাখুন। যেমন– লেবু, কমলা, আচারজাতীয় খাবার। বোতলে নিতে পারেন লেবু দিয়ে চিনির শরবত, মাল্টার জুস প্রভৃতি।
১০. আকুপ্রেশার দিতে পারেন হাতের নানা সংযোগ পয়েন্টে। যা এই মোশন সিকনেস নামক ভোগান্তি থেকে আপনাকে উপশম দিতে পারে।
১১. কখনও খালি পেটে বা ভরপেটে জার্নি করবেন না। হালকা খাবার খাবেন তবে কলা, ডিম সিদ্ধ টাইপের খাবার খাওয়া বেশি থেকে বিরত থাকুন। এড়িয়ে চলুন মশলা-চর্বিযুক্ত খাবার।
লেখক: পুষ্টিবিদ, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল, ঢাকা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।