বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : অ্যাপলের তৈরি আইফোন পৃথিবীর সবচেয়ে দামী ও জনপ্রিয় ফোনগুলোর একটি। অনেকেরই স্বপ্ন থাকে একটি আইফোনের মালিক হওয়ার। অনেকের কাছেই এটি আবার সামাজিক অবস্থান বা স্ট্যাটাসের প্রতীকস্বরুপ। কিন্তু সাধ থাকলেও আইফোন কেনার সাধ্য আছে ক’জনার। তবে এমনও অনেকে আছেন যারা সাধ্যের বেড়াজালে স্বপ্নকে বন্দী রাখেন না, তাই পুরাতন বা ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ হলেও তাদের আইফোন-ই চাই।
আবার সামর্থ্যবান আইফোনপ্রেমীদের অনেকেরই নতুন আইফোনের প্রতি রয়েছে অমোঘ টান। আইফোনের নতুন সিরিজ বাজারে এলেই তাকে আপন করে নিতে তাদের পকেট কখনো টান পড়ে না। তাই পুরাতনকে ছেড়ে নতুনের পানে এগিয়ে যান তারা।
বাজারে তাই একদিকে যেমন আছে সাধ্য-সংকটে ভোগা একদল আইফোনপ্রেমী, অন্যদিকে আছে ‘নতুন আইফোন’-এর পাণিপ্রার্থী একদল বিশ্বস্ত আইফোন অনুসারী। চাহিদা-যোগানের বাজার ব্যবস্থাপনায় এই দুই দলের এক চমৎকার মিথস্ক্রিয়া তৈরি হয়েছে। আর তাই পুরাতন বা সেকেন্ড হ্যান্ড আইফোনের বাজার মোটামুটি বছরজুড়েই থাকে সরগরম। আইফোন
পুরাতন আইফোন আসন না নকল যেভাবে যাচাই করবেন?
সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরাতন আইফোনের বেশ চাহিদা রয়েছে বাজারে। সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় অনেকেই পুরাতন আইফোনের দিকেই হাত বাড়ান। এখানেই ‘আসল না নকল’- এই বিষয়টি সামনে চলে আসে। আপনি যে ফোনটি কিনতে যাচ্ছেন সেটির কোন পার্টস বা যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা, করা হয়ে থাকলে নতুন লাগানো যন্ত্রাংশটি অ্যাপলের আসল (অরিজিনাল) পণ্য কিনা- এমন বিষয়গুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যাপল অবশ্য ব্যবহারকারীদের এই সমস্যার সমাধান দিয়ে রেখেছে আইফোনেই। এজন্য খুব বেশি টেকনিক্যাল জ্ঞান থাকারও প্রয়োজন নেই ব্যবহারকারীর। আইফোনের সেটিংস থেকেই আপনি জেনে নিতে পারেন আইফোনটি এবং এর বিভিন্ন ডিভাইস আসল না নকল। কীভাবে, চলুন জেনে নেওয়া যাক:
প্রথমেই আইফোনের সেটিংস থেকে আপনাকে ‘জেনারেল’ অপশনে যেতে হবে। এবার ‘অ্যাবাউট’ অপশনটিতে ট্যাপ করলে যে পেজে নিয়ে যাবে সেখানে স্ক্রল করে দেখুন ‘পার্টস এন্ড সার্ভিস’ নামে কোনো অপশন দেখায় কিনা। যদি না দেখায়, বুঝে নিবেন এই ফোনটির কোনো পার্টস বা যন্ত্রাংশ পরিবর্তন বা রিপ্লেস করা হয়নি। আর যদি ‘পার্টস এন্ড সার্ভিস’ অপশনটি পেজে দেখতে পান, এর অর্থ হচ্ছে এই ফোনটির কোনো না কোনো পার্টস অবশ্যই পরিবর্তন করা হয়েছে।
তবে এখনই বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা পুরাতন পার্টস রিপ্লেস করে যদি অ্যাপলের ‘অথেনটিক’ পার্টস লাগানো হয়ে থাকে তাহলে কোনো সমস্যা নেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেমন করে বুঝবেন নতুন লাগানো পার্টস আসল না নকল।
এটা যাচাই করতে হলে প্রথমে ‘পার্টস এন্ড সার্ভিস’ অপশনটিতে ট্যাপ করে যেতে হবে ‘স্ট্যাটাস’-এ। এবার আইফোনই আপনাকে জানিয়ে দিবে নতুন পার্টস আসল বা অথেনটিক কিনা। রিপ্লেস করা নতুন পার্টস যদি অ্যাপলের অথেনটিক সোর্স থেকে কেনা হয়ে থাকে তাহলে ‘স্ট্যাটাস’ দেখাবে ‘জেনুইন’।
তবে ‘জেনুইন’ ব্যতীত অন্য কোনো কিছু যদি স্ট্যাটাস হিসেবে দেখায়, যেমন ‘ইমপরট্যান্ট ব্যাটারি মেসেজ’ বা ‘ইমপরট্যান্ট ডিসপ্লে মেসেজ’, তাহলে বুঝতে হবে আইফোনের নির্দিষ্ট পার্টসটি অ্যাপলের নিজস্ব সোর্স থেকে নয়, বরং অন্য কোনো থার্ড-পার্টি সোর্স থেকে কেনা হয়েছে।
আইফোনে থার্ড-পার্টি অ্যাপস ব্যবহার করলে যে ক্ষতি হতে পারে
অনেক থার্ড-পার্টি প্রতিষ্ঠানই দাবি করেন, তাদের পার্টস বা যন্ত্রাংশ আইফোনের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু আইফোনের মতো হাই-এন্ড স্মার্টফোনগুলোতে থার্ড-পার্টি প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের বেশ কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার করলে অ্যাপলের ওয়ারেন্টি আপনি পাবেন না। পাশাপাশি অ্যাপলের ‘অথেনটিক’ পার্টস ব্যবহার না করলে ডিভাইসেরও ক্ষতি হতে পারে।
থার্ড-পার্টি সোর্স থেকে পার্টস ব্যবহার করা সম্পর্কে অ্যাপলের ভাষ্য হচ্ছে, ‘থার্ড-পার্টি পার্টস হয়তো দাবি করতে পারে যে তারা অ্যাপলের তৈরি পণ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু এই পার্টসগুলো জেনুইন অ্যাপল পার্টস বা ব্যবহৃত অ্যাপল পার্টসের মতো একই লেভেলে কাজ না-ও করতে পারে। এতে করে গোপনীয়তা বা নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।’
অনেক থার্ড-পার্টি প্রতিষ্ঠানই দাবি করেন, তাদের পার্টস বা যন্ত্রাংশ আইফোনের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু আইফোনের মতো হাই-এন্ড স্মার্টফোনগুলোতে থার্ড-পার্টি প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের বেশ কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার করলে অ্যাপলের ওয়ারেন্টি আপনি পাবেন না। পাশাপাশি অ্যাপলের ‘অথেনটিক’ পার্টস ব্যবহার না করলে ডিভাইসেরও ক্ষতি হতে পারে।
এই যেমন আইফোনে থার্ড পার্টি ডিসপ্লে স্ক্রিন ব্যবহার করলে মাল্টি-টাচ ও ফেস আইডি’র মতো বিভিন্ন ফিচার ঠিকভাবে কাজ না-ও করতে পারে। এর ফলে স্ক্রিনের টাচ-রেসপন্স করার ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে স্ক্রিনে টাচ করলেও নির্দেশ অনুযায়ী ফোনটি কাজ করবে না। আবার কখনো কখনো টাচ না করা সত্বেও নিজে থেকেই স্ক্রিনে ট্যাপ পড়ে যেতে পারে। এই ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত অসঙ্গতি এড়াতে আইফোনের মতো উচ্চ মানের দামি স্মার্টফোনে অবশ্যই উচিত অথেনটিক ও জেনুইন পার্টস ব্যবহার করা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।