লাইফস্টাইল ডেস্ক : উৎসবে কিংবা বাড়ির আঙিনায়, সাধারণ কিংবা জমকালো সাজে, বাঙালি নারীদের পছন্দের তালিকায় প্রথম জায়গা করে নিয়েছে শাড়ি। শাড়ি অপছন্দ করে এমন নারী পাওয়া মুশকিল।
শীত বা গরম সব মৌসুমেই শাড়ি ছাড়া নারীদের চলে না। তবে সূক্ষ্ম বুনটের পাশাপাশি বিচিত্র ও আকর্ষণীয় নকশার জন্য টাঙ্গাইলের শাড়ি বিখ্যাত।
টাঙ্গাইলের তাঁতশিল্পের আগমন কীভাবে?
টাঙ্গাইলে তাঁতশিল্প প্রসার প্রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে। ইতিহাস থেকে জানা যায়- বসাক (হিন্দু তাঁতি) সম্প্রদায়ের লোকেরাই টাঙ্গাইলের আদি তাঁতি। এরা মূলত দেশান্তরি তাঁতি। ঢাকা ও ধামরাই ছিল তাদের আদি নিবাস।
বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা ও হিউয়েন সাং-এর ভ্রমণকাহিনীতে টাঙ্গাইলের তাঁতশিল্পের উল্লেখ রয়েছে। একসময় টাঙ্গাইলের তাঁতিরা মসলিন শাড়ি বুনতেন বলেও শোনা যায়। সে মসলিনের দিল্লির মোঘল দরবার থেকে বৃটেনের রাজপ্রাসাদ অবধি গতি ছিল।
তবে তাঁতশিল্পের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ফলে টাঙ্গাইলের সফট সিল্ক ও কটন শাড়ির উদ্ভব হয়েছে। এ শাড়ির বৈশিষ্ট্য হলো পাড় বা কিনারের নান্দনিক কারুকাজ।
এছাড়া মুসলমান যে সব তাঁতি ছিলেন তাদেরকে বলা হতো জোলা। এই জোলা তাঁতিদের সংখ্যাধিক্য ছিল টাঙ্গাইল, কালিহাতী ও গোপালপুর। ক্ষৌম বস্ত্র বো মোটা কাপড় বোনার কাজে এদের একচেটিয়া অধিকার ছিল।
টাঙ্গাইলের শাড়ি বোনার তাঁত দু’ধরনেরঃ (১) চিত্তরঞ্জন (মিহি) তাঁত, (২) পিটলুম (খটখটি) তাঁত। এ দুই ধরনের তাঁতেই তৈরি করা হয় নানা রং ও ডিজাইনের নানা নামের শাড়ি।
সুতি শাড়ি, হাফ সিল্ক শাড়ি, সফট সিল্ক শাড়ি, টাঙ্গাইল বি.টি, জরিপাড়, হাজারবুটি, ইককাত, নীলাম্বরী, ময়ুরকন্ঠী নানা নামের হয়ে থাকে টাঙ্গাইল শাড়ি।
টাঙ্গাইল শাড়ির প্রধান বৈশিষ্ট্য
টাঙ্গাইল শাড়ির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল পাড়ের কাজ। এসব শাড়ির পাড় বা কিনারের কাজ থাকবেই। কিছু শাড়িতে মোটা পারের কাজ থাকে আবার কিছু শাড়িতে চিকন পারের কাজ থাকে।
এছাড়া টাঙ্গাইলের শাড়ির আরেক প্রধান বৈশিষ্ট হল সূক্ষ বুনন এবং আকর্ষনীয় নকশা।
প্রযুক্তি উন্নতির আগে টাইঙ্গাইলে শাড়ি নকশা ছিল সরল, অনেকটা জ্যামিতিক ধরনের । সাথে ছিল জমিনে বুটি কাজ। তবে বর্তমানে তাঁতিরা ডবি এবং জ্যাকার্ড মেশিন এর প্রযুক্তি ব্যবহার করে জটিল যে কোন নকশা খুব সহজেই টাঙ্গাইল শাড়িতে ফুটিয়ে তুলতে পারেন
অন্য শাড়ি ১০-১২ হাত হলেও টাঙ্গাইল শাড়ি দৈর্ঘ্যে ১৪ হাত পর্যন্তও লম্বা হয়ে থাকে। শাড়ির লম্বা ও এর ব্যাপ্তির প্রচলন প্রথমে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি থেকেই শুরু।
হাফ সিল্ক আর সুতির উপরেই তৈরি করা হয় এই টাঙ্গাইল শাড়ি। আদামদায়ক কাপড়ের জন্য গরমে নারীদের খুবই পছন্দ টাঙ্গাইল শাড়ি।
মূলত টাঙ্গাইল শাড়ির রং হালকাই হয়। ১০০, ৮২, ৮৪ কাউন্টের সুতো দিয়ে বোনা হয় এই তাঁতের শাড়ি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।