জুমবাংলা ডেস্ক : হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে আরও ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। কিছু কিছু দোকানে পেঁয়াজের সংকটও দেখা গেছে।
আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মালিবাগ, শান্তিনগরসহ কয়েকটি খুচরা বাজারে দেখা গেছে, দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২৪০ টাকা দরে। আর ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা দরে।
তবে কিছুটা কম দামে পাওয়া যাচ্ছে চায়না পেঁয়াজ। বেশ বড় আকারের এ ধরনের পেঁয়াজের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা দরে।
গতকাল শুক্রবার সকালে সকাল ১০টা পর্যন্ত খুচরা বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ১০৬ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। ঘণ্টাখানেক পরে বাজারে খবর ছড়িয়ে পড়ে, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার খবর। আমদানিকারকদের কাছে ফোন করে বিষয়টি নিশ্চিত হতেই ব্যবসায়ীদের চোখেমুখে মেলে বিজয়ের হাসি। দুপুর ১২টার দিকে এক লাফে ১০ টাকা বেড়ে হয় ১২০। এর পর এক রকম অশ্ববেগে ছুটেছে দাম। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বেড়েছে পণ্যটির দাম। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৫টায় প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১৬০ টাকায়। সর্বশেষ দাম উঠে ২০০ টাকায়।
পেঁয়াজ আমদানিকারক ও শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মাজেদ বলেন, কয়েক দিন ধরেই পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে আরেকটু বেড়েছে। তবে বাজারে দেশি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহে সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু পূর্ব ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছি আমরা। আগের এলসি করা পেঁয়াজ তারা সরবরাহ করবে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান বলেন, ভারত রপ্তানি বন্ধের খবরে দাম বাড়িয়েছেন ব্যাপারীরা। এখন মোকামে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। মোকামেই দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২০০ টাকায়। এর সঙ্গে পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ তো আছেই। মূলত পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ার কারণে খুচরা বেড়েছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর ভারত প্রতি টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলা হয়েছিল। তার আগেই দেশটি পেঁয়াজ একেবারে রপ্তানি বন্ধ করে দিল। যদিও কোনো দেশের সরকার অনুরোধ করলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানির সুযোগ দিতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টনের বেশি। গত অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৩৬ লাখ টনের মতো। তবে ক্ষেত থেকে তুলে সংরক্ষণ করা পর্যন্ত প্রায় ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়। ফলে প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ লাখ টন আমদানি করতে হয়, যার ৯০ শতাংশের বেশি আসে ভারত থেকে। এ জন্য ভারত পেঁয়াজের ওপর কোনো ধরনের খড়্গ দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে প্রভাব পড়ে। যেমনটি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে এ দেশে রেকর্ড ৩০০ টাকা ছুঁয়েছিল কেজি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।