আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের সবচেয়ে বড় শিকার হলেও চীনের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে একটি নাটকীয় প্রত্যাবর্তন করেছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে উন্নত চিপ পাওয়ার রাস্তা বন্ধ হলে বিপাকে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু তার পাঁচ বছর পরে প্রতিষ্ঠানটি চমক দেখিযে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
গবেষণা সংস্থা কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, কোম্পানিটি ২০২৪ সালের প্রথম দুই সপ্তাহে চীনে শীর্ষ বিক্রিত স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ছিল। ফার্মটি উল্লেখ করেছে যে, ২০১৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোম্পানিটিকে একটি বাণিজ্য কালো তালিকায় রাখার পর এই প্রথম হুয়াওয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুয়াওয়েকে চীনের সামরিক বাহিনীর সাথে সম্পর্ক রাখার জন্য অভিযুক্ত করেছে, যা কোম্পানিটি অস্বীকার করেছে।)
২০২৩ সালের আগস্টে হুয়াওয়ে মেট ৬০ প্রো নামের এক স্মার্টফোন বাজারে নিয়ে আসে। এই স্মার্টফোন রীতিমতো বাজার মাত করে দেয়। উন্নত প্রযুক্তির এই স্মার্টফোন বাজারে আসার পর এই খাত–সংশ্লিষ্ট মানুষেরা অবাক হয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্র চীনের কাছে উন্নত প্রযুক্তি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও হুয়াওয়ে কীভাবে এত উন্নত ফোন তৈরি করতে পারল, তা নিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি হয়।
কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের তথ্যানুসারে, হুয়াওয়ে এই ফোন দিয়ে চীনের বাজারে অ্যাপলের বাজার হিস্যা এক ধাক্কায় কমিয়ে দিতে পেরেছে। সেপ্টেম্বরের শেষে অর্থাৎ বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে চীনের বাজারে হুয়াওয়ের হিস্যা ১৪ শতাংশে উন্নীত হয়; বছরের প্রথম প্রান্তিকে যা ছিল ১০ শতাংশ। একই সময় স্মার্টফোনে বাজারে অ্যাপলের হিস্যা ২০ থেকে কমে ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এমএমআইসি, যা হুয়াওয়ের স্মার্টফোন প্রসেসর তৈরি করে, মঙ্গলবার ত্রৈমাসিক নেট আয় ১৭ কোচি ৪৭ লাখ ডলার রিপোর্ট করেছে, যা বিশ্লেষকদের প্রত্যাশা (১৩ কোটি ৯১ লাখ ডলার) থেকে বেশি।
হুয়াওয়ের এআই চিপস
হুয়াওয়ের এ সাফল্যে পেছনে নেপথ্যে ভূমিকা রেখেছে তাদের এআই চিপস। কোম্পানির অ্যাসেন্ড এআই চিপসের জোরালো চাহিদা কোম্পানিটিকে তার স্মার্টফোনের উৎপাদন ধীর করতে বাধ্য করছে, সোমবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে। হুয়াওয়ে তার স্মার্টফোন প্রসেসর এবং এআই চিপ উভয় উৎপাদন করার জন্য একটি সুবিধা ব্যবহার করে বলে জানা গেছে, তবে তারা চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারছে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমাবদ্ধতার মধ্যেও হুয়াওয়ের একটি উন্নত প্রসেসর তৈরি করার ক্ষমতা চিত্তাকর্ষক ছিল, চীনা চিপ নির্মাতারা সম্ভবত ব্যয়-কার্যকর পদ্ধতিতে আরও উন্নত সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করতে চেষ্টা করছে। ২০২৩ সালে হুয়াওয়ে ৯৯ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৯০০ কোটি ডলার রাজস্ব আয় করেছে। মূলত কোম্পানিটির ইলেকট্রনিকস পণ্য প্রত্যাশাতীত বিক্রি হওয়ায় ২০২৩ সালে তারা রাজস্ব আয়ে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। সূত্র: ফরচুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।