বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : সাগরের তলদেশে অদ্ভুৎ সব প্রাণীদের বসবসা। যেমন অদ্ভুৎ এদের আচরণ, কারও কারও চেহারতেই থাকে বিশেষ চমক। এমনই একটা প্রাণী হলো লিফি সি ড্রাগন।
এর শরীরের কিছু অঙ্গ দেখতে হুবহু সামুদ্রিক উদ্ভিদের পাতার মতো। এই প্রাণীটিকে অনেকেই সমুদ্রের জীবন্ত শিল্পকর্ম হিসেবে মনে করেন।
এই প্রাণীটির বৈজ্ঞানিক নাম ফাইকোডিউরাস ইক্যুয়েস। পাওয়া অস্ট্রেলিয়ার উপকূলবর্তী সমুদ্রে। এদের চেহারার মতো জীবনযাপনও বিস্ময়কর!
লিফি সি ড্রাগনের শরীর পাতার মতো বেশে অঙ্গ দিয়ে আবৃত।
এই পাতার মতো অঙ্গ তাকে গভীর সমুদ্রে টিকে থাকতে সাহায্য করে। সবুজ, হলুদ এবং বাদামি রঙের সংমিশ্রণে তৈরি এই গড়া এদের গায়ের রঙ। প্রাণীর রং সাগরের শৈবাল ও উদ্ভিদের সঙ্গে একেবারে মিশে যেতে। ফলে এরা নিঁখুত ছদ্মবেশ নিতে পারে।
ছদ্মবেশ যেমন শিকারীদের বিভ্রান্ত করে। শিকারি প্রাণীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষাও করে এই ছদ্মবেশ। এমনকী এরা যেসব প্রাণীদের শিকার করে তাদের চোখেও সহজেই ধুলো দিতে সক্ষম হয়।
এদের শরীরের তীক্ষ্ণ চোখ এবং ছোট ছোট পাখনা একে পানিতে ধীরে ও অনায়াসে ভাসতে সাহায্য করে। লিফি সি ড্রাগনের খাদ্যতালিকায় রয়েছে ছোট প্রাণী, যেমন চিংড়ি এবং প্ল্যাঙ্কটন।
ধীরগতিতে চলা এই প্রাণী প্রায় স্থির হয়ে শিকার ধরে। প্রায় ২০-২৪ সেন্টিমিটার দীর্ঘ এই প্রাণী ১০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
লিফি সি ড্রাগনের প্রজনন পদ্ধতি প্রকৃতির আরেক বিস্ময়। স্ত্রী ড্রাগন ডিম পেড়ে পানিতে ভাসিয়ে দেয় না। কিংবা পাথর ও উদ্ভিদের জঞ্জালেও ডিম পাড়ে না।
তারা ডিম পুরুষ ড্রাগনের পেছনের অংশে স্থাপন করে। পুরুষ ড্রাগন সেই ডিমগুলো যত্নসহকারে বহন করে এবং সন্তান জন্মানোর সময় পর্যন্ত সেগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
লিফি সি ড্রাগন বর্তমানে একটি বিপন্ন প্রজাতি। সমুদ্র দূষণ, বাসস্থান হারানো এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ায় এই প্রাণী সংরক্ষণের জন্য বিশেষ আইন প্রণয়ন এবং কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।