জুমবাংলা ডেস্ক: দীর্ঘ ৮ বছরের সংসার। হঠাৎ একদিন কাজ শেষে ঘরে ফিরে দেখেন স্ত্রী নেই। নেই স্ত্রীর জামা-কাপড়, গহনা। নেই ঘরে রক্ষিত ফোরম্যান স্বামীর কষ্টে অর্জিত জমানো টাকা। অনেক খোঁজাখুজির পরে জানতে পারলেন অন্য একটি পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক করে স্বামীকে রেখে পালিয়ে গেছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুর সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ভাবুকদিয়া গ্রামে। উপায়ন্ত না পেয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে আদালতে মামলা করেছেন স্বামী মো. সুজন সিকদার (৩০)। মামলার আসামিরা হলেন সুজনের স্ত্রী লাভলী আক্তার সুমাইয়া (২৪) ও তার প্রেমিক আলামিন শেখ (৩১)।
ফরিদপুর জজ কোর্টের ৬ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সুজন। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মামলাটি আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ বাশার।
ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের শোলাকুণ্ডু গ্রামের মৃত কলিমদ্দিন শেখের ছেলে মো. আলামিন শেখ (৩১)। তিনি বিবাহিত। ৩ বছরের কন্যা সন্তান আছে তার। ২৬ মে বৃহস্পতিবার সুমাইয়াকে নিয়ে পালিয়ে যায় আলামিন।
জানা যায়, ৮ বছর আগে ভাবুকদিয়া গ্রামের মান্নান মোল্লার মেয়ে লাভলী আক্তার সুমাইয়ার সঙ্গে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর গ্রামের নয়ন সিকদারের ছেলে মো. সুজন সিকদারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।বিয়ে করে স্ত্রী সুমাইয়াকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ী ভাবুকদিয়া গ্রামে বসবাস করতেন সুজন। সুজন মাঝখানে কিছুদিন কাতারে প্রবাস জীবন পার করে দেশে ফিরে এসে ফরিদপুর শহরে একটি রডের কোম্পানিতে ফোরম্যানের কাজ নেন।
সুজন সিকদার বলেন, আমার স্ত্রী কয়েক মাস ধরে মোবাইলে একটি ছেলের সঙ্গে গোপনে কথা বলতো। গত রোজার মধ্যে আমি স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়ে হাতেনাতে ধরে শ্বশুরকে বলি। তখন আমার স্ত্রী আর কথা বলবে না বলে জানায়।তিনি বলেন, আলামিন আত্মীয় হওয়ার সুবাদে আমাদের বাড়িতে যাতায়াত করতো। এ সুযোগে আমার স্ত্রী সুমাইয়াকে সে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নানাভাবে ফুসলিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে গেছে।
গত ২৬ মে বৃহস্পতিবার আমি কাজে বের হলে আলামিন বাড়িতে এসে আমার স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় আমার ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ ৩ লাখ টাকা ও ২ ভরি গহনা সঙ্গে নিয়ে গেছে।আমি ও আমার শ্বশুর মান্নান মোল্লা আলামিনের বাড়িতে গিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। আমরা তার বাড়িতে যাওয়ার আগেই সুমাইয়াকে নিয়ে বাড়ি থেকে সরে যায় আলামিন।
সুজন বলেন, স্ত্রীকে ফিরে পেতে আমি ফরিদপুর জজ কোর্টের ৬ নম্বর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
মেয়ের বাবা মান্নান মোল্লা বলেন, আমি আমার মেয়েকে ফিরে পেতে চাই। আলামিনের পরিবারকে বারবার অনুরোধ করেছি। তারা কোনো সহযোগিতা করছে না।
আলামিনের বড় ভাই দুলাল শেখ বলেন, আমার সৎ ভাই আলামিনকে ৫ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেই। তাদের ৩ বছরের একটি কন্যা সন্তান আছে। তবে আলামিনের সেই স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা নারী ও শিশু কোর্টে চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে সে অন্যের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়েছে। আমি আমার ভাইকে অনুরোধ করেছি সুজনের স্ত্রীকে ফিরিয়ে দিয়ে আসতে।
মামলার কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম স্টালিন বলেন, সুজন ও সুমাইয়া এখনও স্বামী-স্ত্রী। এদিকে আলামিনও বিবাহিত। তার বিরুদ্ধে নারী শিশু আদালতে তার স্ত্রীর দায়ের করা নির্যাতন মামলা চলমান রয়েছে। এমন অবস্থায় আলামিন সুজনের স্ত্রী সুমাইয়াকে নিয়ে পালিয়ে যায়। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে মামলা দায়ের করে আলামিন ও সুমাইয়ার বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।