বিনোদন ডেস্ক : মাশরুর পারভেজ। বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি সোহেল রানা (মাসুদ পারভেজ)র ছেলে। মাশরুরের পরিচালনায় তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র মুক্তি পাবে আগামী ১১ আগস্ট। নিজের চলচ্চিত্রভাবনা ও এসময়ের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কথা বললেন তিনি।
আপনার দ্বিতীয় চলচ্চিত্রের নাম ‘গোয়িং হোম।’ ছবিটি ৯০ মিনিটের। পাশাপাশি গল্পবলার ধারাটাও ভিন্ন। আপনি কমার্শিয়াল ঘরানার সুপারস্টারের ঘরে বড় হয়েছেন। কিন্তু ছবি নির্মাণ করছেন অফট্র্যাকের! ব্যাখ্যা করবেন
এটা আমার স্বাধীন ভাবনার জায়গা। আমি যেভাবে গল্পটা বলতে চেয়েছি সেভাবেই বানিয়েছি। এবং একজন শিল্পযোদ্ধার এটিই প্রধান কাজের ধরন হওয়া উচিত যে সে কারো কথা শুনবে না। সে যেটা বলতে চায় সেটাই বানাবে।
বাবা সোহেল রানা কীভাবে দেখেছেন- পুত্রের এই চলচ্চিত্রে আসার জার্নিটা।
শুরুর দিকে মানতে পারেননি। বলেছিলেন- বিয়ে করে সংসারী হও । খরচাপাতি না হয় আমি দেবো। মা বলেছিলেন, আর যাই করিস। পড়াশোনাটা আগে চুড়ান্তভাবে শেষ কর। কিন্তু আমার তো নিয়তি এই চলচ্চিত্রের দিকে। একজন নির্মাতা হিসেবে আমার আত্মপরিচয়টা ভীষণ সম্মানের মনে হয়। চলচ্চিত্রই আমাকে ডাকে প্রতিনিয়ত।
চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রতিবন্ধকতা এখন কী ?
অনেকগুলো, কোনটা রেখে কোনটা বলবো। এই যে আমি চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি। অন্য যে কোনো কাজের চেয়ে এই চলচ্চিত্র নির্মাণে আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো, এটা ভেবেই করছি। এই সাহস, চলচ্চিত্রের প্রতি এমন তীব্র প্রেম ছাড়া এই পেশায় এখন কাজ করা সম্ভব না। তাই এখন যে একটা বাজে ছবিও বানাচ্ছে, তাকেও সমাদর করা উচিত যে না সে শিল্পচর্চার ভেতরে অন্তত রয়েছে। সিনেপ্লেক্স মালিকগুলোকেও ভাবতে হবে যে তারা অন্য ব্যবসার মতো এটা করলে হবে না। শিল্পের প্রতি ন্যুনতম দায়বোধ তাদেরও থাকতে হবে।
বাংলাদেশে স্টার কিডরা তাদের লিগ্যাসি ধরে রেখেছে খুব কম। অধিকাংশই চলচ্চিত্রমুখীই হয়নি। সেক্ষেত্রে মাশরুরকে আমরা কতদিন পাবো। সে কী সৌখিন চলচ্চিত্রকার হিসেবে কাজ করছে?
দেখুন। আমি যদি সৌখিনতা করতে আসতাম তাহলে আমার এই ছবি নামাতে আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে লোন করে ছবি করতাম না। আমি এই সিনেমার মানুষ। চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবেই আমি কাজ করে যেতে চাই। হ্যাঁ, অবশ্যই আমি বেঁচে থাকার জন্য এর পাশাপাশি অন্যকিছুও করবো। কিন্তু ফিল্মমেকিং ছাড়বো না।
চলচ্চিত্রের এই নির্মাতা হবার পেছনে কার কার অবদান অনেকের। তবে প্রথম জন আমার বাবা সোহেল রানা। দ্বিতীয় জন নির্মাতা শহীদুল ইসলাম খোকন।
কিংবদন্তী নায়ক রাজ রাজ্জাক ও সোহেল রানা। দুজন সাদৃশ্য ও বৈপরীত্য বলতে বললে কী বলবেন —
দুজনেই চলচ্চিত্র অন্তঃপ্রাণ। দুজনই মেগাস্টার। কিন্তু আমার বাবা বলে বলছি না। একজন সোহেল রানা কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই শুধু নায়ক নন। একাধারে প্রযোজক পরিচালকসহ এই চলচ্চিত্রের বিভিন্ন অঙ্গনে কাজ করেছেন। একারণে রাজ্জাক আংকেলের থেকেও আমার বাবাকে এগিয়ে রাখবো।
আমাদের দেশে মাসুদ রানাকে নিয়ে ছবি নির্মাণ হচ্ছে। এদেশে সেলুলয়েডের প্রথম মাসুদ রানা আপনার বাবা। আপনি নির্মাতা হিসেবে মাসুদ রানার সিক্যুয়েল করবেন না?
অবশ্যই করবো। সেইভাবে কিছু প্ল্যানও করে রেখেছি। তবে আমার পরবর্তী ছবি হবে পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক ছবি। এর নামও ঠিক করে রেখেছি। ছবির নাম হবে ‘পাগলা সিএনজি’। নাচে গানে ভরপুর একটা ছবি।
এখনকার ছবিগুলো কিছুটা সফল হলেই লাখ টাকা বা কোটি টাকার লাভের হিসাব দিচ্ছে। ফেসবুকে বা নানান ইন্টারভিউতে তারা ঘোষণা দিচ্ছে। এই নিয়ে দুপক্ষের তর্কও শোনা যায়। সর্বশেষ মাসুদ রানা ছবিতে ৭০০ কোটি টাকা ব্যবসা করবে বলে প্রযোজক আশাবাদ ব্যক্ত করছেন। আপনি তো দুটো ছবির প্রযোজক। ছবি নিয়ে কেমন আশা দেখছেন।
দেখুন সিনেমার দিন ফিরবে তবে সময় লাগবে। আর এই যে কোটি টাকা লাভের গল্প, এসবই ফেইক। প্রপাগান্ডা দিয়ে হয়ত দর্শক কৌতুহল তৈরি করছে। কিন্তু সিনেমার বাজার এখনও সেই জায়গায় আসতে আরও সময় লাগবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।