বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : মার্কিন আদালতে নিজের কিশোরী মেয়ের জীবন ভিক্ষা চাওয়ার ভয়ঙ্কর মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের একজন মা।
ওই মায়ের সাক্ষ্য অনুসারে, এক অজানা ব্যক্তি তার মেয়ে ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার ডলার মুক্তিপণ দাবি করে। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, এটি ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে পরিচালিত একটি ‘ভয়েস স্ক্যাম’।
মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক ‘সিনেট জুডিশিয়ারি সাবকমিটি’র কাছে এআই’র ক্ষতি করার সক্ষমতা নিয়ে মঙ্গলবার সাক্ষ্য দেন জেনিফার ডিস্টেফানো। পাশাপাশি, দিন দিন বাড়তে থাকা এই ধরনের কল জালিয়াতির বিপরীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তোলেন তিনি।
‘প্রিয়জনের কণ্ঠস্বর নকলের মতো কারণে এআই নিয়ে সন্দেহ ও ভয় তৈরি হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের সামাজিক কাঠামোর মূল ভিত্তিতেই বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে অথচ এটি নিয়ে কখনও প্রশ্ন তোলা হয়নি’—বলেন ডিস্টেফানো।
ডিস্টেফানো এই কল জালিয়াতির ভুক্তভোগী হন জানুয়ারিতে। সে সময় এক অপরিচিত নাম্বার থেকে আসা কল ধরার পর নিজের ১৫ বছর বয়সী মেয়ের কান্নার আওয়াজ শুনতে পান তিনি।
‘মা, আমি ভুল করে ফেলেছি।’—মেয়ের কান্নাঝড়া কণ্ঠের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন তিনি। পরবর্তীতে ফোনে মেয়ের কাছে ঘটনা জানতে চাইলে এক অজানা ব্যক্তির কণ্ঠ শুনতে পেয়ে তিনি চমকে উঠেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
‘তাত্ক্ষণিকভাবেই ওকে চিত্কার করে এক ব্যক্তিকে বলতে শুনি ‘মাথা পেছনে দিয়ে নীচে শুয়ে পড়’।’
ডিস্টেফানোর মেয়েকে ‘নেশায় আসক্ত করে নিজের ইচ্ছামতো নিপীড়ন চালানোর’ পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা অন্য কাউকে কল দিলে তাকে মেক্সেকোতে ফেলে রেখে আসার হুমকিও দেয় অপরিচিত লোকটির কণ্ঠ। এর পাশাপাশি, ১০ লাখ ডলারের মুক্তিপণও দাবি করেন তিনি।
‘আমি প্রথমে ওকে বিশ্বাস করিনি, কারণ আমি মাত্রই মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। আর আমি নিশ্চিত ছিলাম, এটা ওরই কণ্ঠ আর কান্না ছিল।’ —বলেন ডিস্টেফানো। পরবর্তীতে নিজে ফোন করে সন্তানের সঙ্গে কথা বলার পর পুরো ঘটনাটি বুঝতে পারেন তিনি।
‘ও নিরাপদে আছে জানার পরও আমার রাগ কমেনি। আমি এই কেলেঙ্কারী ও অর্থ আত্মসাতের ভয়ঙ্কর প্রচেষ্টা চালানো লোকদের বকাবকি করি। এর পরও তারা আমার মেয়েকে হত্যার হুমকি দেয়। তখন আমি প্রতিজ্ঞা করি, তাদের শায়েস্তা করব ও কাউকে আমার সন্তানের ক্ষতি করতে দেব না। ফোনটা রেখেই আমি মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে স্বস্তির কান্না কেঁদেছি।’ ডিস্টেফানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলে, এটা স্রেফ ‘প্র্যাংক কল’ ছিল। আর কোনো অপরাধ না ঘটায় তারা এর বিপরীতে কোনো ব্যবস্থাও নিতে পারছে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।