সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশসহ বিভিন্ন ডিসিপ্লিনারি ফোর্সের (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী) বিচারের জন্যই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন-১৯৭৩ বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
রবিবার (১২ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে গুমের মামলায় সামরিক কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আইন সবসময় আইনের গতিতেই চলবে। যখন আদালত থেকে কোনো গ্রেপ্তারি বা অন্য কোনো পরোয়ানা জারি হবে, তখন একজন আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের সামনে উপস্থিত করতে হবে। এটা সংবিধান, ট্রাইব্যুনাল ও ফৌজদারি কার্যবিধিতেও রয়েছে।
‘অর্থাৎ একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলে, যেখানেই গ্রেপ্তার করা হোক না কেন, তাকে আদালতে আনার সময়ে যতটুকু সময় ব্যয় হবে, তা ছাড়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের সামনে উপস্থিত করতে হবে। এটাই হচ্ছে আইনের বিধান। শুধু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন নয়, সংবিধানও স্বীকৃতি দিয়েছে যে গ্রেপ্তার করে ২৪ ঘণ্টার বেশি কাউকে আটক রাখা যায় না।’
তিনি বলেন, আদালত যদি কাউকে ক্ষমতা দেয়, তাহলে আটক রাখতে পারে। সুতরাং যাকে যখনই গ্রেপ্তার করা হবে, তাকে তখনই আদালতের কাছে আনতে হবে। আদালত যদি তাকে আটক রাখতে বলেন, আটক রাখা হবে। আদালত যদি তাকে ছেড়ে দিতে বলেন, সেটাও দিতে পারেন।
‘সুতরাং, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তখন আদালতের হাতে চলে যায়। এটাই হচ্ছে আইনি ব্যাখ্যা। তাই এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ এ বিষয়ে আইনি ব্যাখ্যা চাননি। যদি কেউ চান, নিশ্চয়ই আইনি ব্যাখ্যা জানাব।’
গতকাল ঢাকা সেনানিবাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চার্জশিটে নাম আসা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে প্রসিকিউশন ও ট্রাইব্যুনাল এখনও অফিশিয়ালি কিছু জানে না বলে জানান তাজুল ইসলাম।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমাদের কাছে যেহেতু আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ বলেনি যে তাদের আটক রাখা হয়েছে। তাই মিডিয়াতে যা এসেছে, সেটিকে আমরা আমলে নিচ্ছি না। আমাদের যদি বলা হয় যে তাদের আটক রাখা হয়েছে, তাহলে অবশ্যই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের কাছে আনতে হবে এটাই বিধান। যেহেতু আমরা জানি না, সুতরাং এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই আইন তৈরি করা হয়েছে। এসব আইন সংবিধানের কোনো অনুচ্ছেদ বা বিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও প্রাধান্য পাবে। অর্থাৎ সংবিধান নিজেই বলে দিচ্ছে যে সংবিধানের চেয়েও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন শক্তিশালী। এটি সংবিধানের মাধ্যমেই স্বীকৃত।
বেরোবিতে শিক্ষার্থী কল্যাণ ও উন্নয়ন পরিষদের ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন
তিনি আরও বলেন, এই আইনের কোনো বিধানকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। এই আইনের কোনো বিধানকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিটও করা যাবে না। এটি সব আইনের ওপর প্রাধান্য পাবে। সুতরাং এই আইনের বিধানে যে বিচারের প্রক্রিয়া রয়েছে, তার মধ্য দিয়েই সবাইকে চলতে হবে- এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।