জুমবাংলা ডেস্ক : সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে প্রয়োজনে গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
তৃতীয় দফায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউরের আরও সম্পদ জব্দ ও ফ্রিজ করার জন্য আদালতে আবেদন করেছে দুদক। প্রয়োজনে তাকে গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এসময় আদালতে ১৩৭ শতাংশ জমি, বসুন্ধরায় ৮ হাজার ৭০ স্কয়ার ফিটের কমার্শিয়াল স্পেস এবং ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা মূল্যের ১৯টি কোম্পানির শেয়ার জব্দ ও ফ্রিজ করার আবেদন করেছে দুদক।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুদক সূত্রে জানা যায়, অবৈধ সম্পদ এবং ব্যাংক হিসাবের টাকার অনুসন্ধানে রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা সরানোর তথ্য মিলেছে। ১১৫টি ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে দেয়া যায়, সেখানে মাত্র ৪ কোটি টাকা রয়েছে। আর ছাগলকাণ্ড নিয়ে হট্টগোলের মধ্যেই এসব হিসাব থেকে ৮ কোটি টাকা তুলে নেন মতিউর।
এর আগে, ৩০ জুন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ক্রয় করা কোনো জমি আছে কি না, সেটি জানতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে চিঠি দেয় দুদক।
জানা যায়, মতিউরের বিরুদ্ধে এর আগে চারবার দুর্নীতির অভিযোগ পায় দুদক। কিন্তু প্রতিবারই নানা কৌশলে নানা প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ মুছে ক্লিন শিট পেয়েছিলেন তিনি।
মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম দুদকে অভিযোগ আসে ২০০৪ সালে। সে সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচারের। অভিযোগ আছে, হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা টাকা প্রবাসী কোনো এক আত্মীয়ের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে তা রেমিট্যান্স বাবদ দেখিয়েছিলেন ট্যাক্স ফাইলে।
২০০৮ সালে আবারও দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে তার বিরুদ্ধে। এবার অভিযোগ, বিলাসবহুল পণ্যের শুল্ক মাফ করিয়ে দেয়ার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের। কিন্তু তদন্ত শুরু হতে না হতেই প্রভাবশালীদের চাপে তা চাপা পড়ে যায়, ক্লিন শিট পান মতিউর। এরপর ২০১৩ ও ২০২১ সালে আরও দুবার দুদকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়। অভিযোগ ছিল অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তির। কিন্তু কৌশলী মতিউর অবৈধ সম্পদকে পারিবারিক ব্যবসা ও ঋণ দেখিয়ে প্রস্তুত করেন ট্যাক্স ফাইল। ফলে আবারও ক্লিন শিট।
তবে পঞ্চমবারের মতো তদন্তে নেমে দুদক আগের চারবারের প্রতিটি বিষয়ে পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়েছে। একইসঙ্গে যে বা যাদের মাধ্যমে বারবার দায়মুক্তি পেয়েছে মতিউর, তা-ও খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানায় দুদক।
ঈদুল আজহার আগে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর প্রেক্ষিতেই এনবিআরের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।