জুমবাংলা ডেস্ক : একটা সময় করতেন ডিশ ব্যবসা। বাড়িতে ছিল একটিমাত্র টিনশেড ঘর। কিন্তু প্রাথমিকের নিয়োগসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিক্রি করে মাত্র চার বছরেই রাতারাতি হয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ।
ব্যাংকে রয়েছে কয়েক কোটি টাকা, আর নির্মাণ করছেন আলিশান বাড়িও। বলছিলাম মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত ফটিক চন্দ্র গাইনের ছেলে অসীম গাইনের কথা। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলেও তিনি ধরাছোয়ার বাইরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুধু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগই নয়, বেশ কিছু পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত অসীম ও তার সহযোগীরা। একসেট প্রশ্নোত্তর দেওয়ার শর্তে এক একজনের কাছ থেকে পাঁচ থেকে ১২ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অসীমের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত করেছে জেলার গোয়েন্দা পুলিশ।
সূত্র জানায়, গত ২৯ মার্চ মাদারীপুরের ১৮টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা। অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তরপত্র সরবরাহ করে একটি চক্র। এসময় আটক করা হয় আটজনকে। পরে এ ঘটনায় সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী রেজাউল করিম বাদী হয়ে প্রধান অভিযুক্ত অসীমসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
অভিযান চালিয়ে অসীমের সহযোগী রনি বিশ্বাস গ্রেফতার হলেও এখনো পলাতক প্রধান অভিযুক্ত।
পুলিশ জানায়, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত সবাইকেই আনা হবে আইনের আওতায়। ব্যাংকে কোটি টাকা আর অবৈধ অর্জনে আলিশান বাড়ি নির্মাণের লিখিত অভিযোগ পেয়ে অসীমের সম্পত্তির বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা। তবে অসীমের স্বজনদের দাবি, ডিশ ব্যবসায় উপার্জিত অর্থে বাড়ি করেছেন অসীম।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান বলেন, অসীমের বিরুদ্ধে মাদারীপুর ও রাজধানী ঢাকায় একাধিক মামলা হয়েছে। এছাড়া মাদারীপুর দুদক কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগও পাওয়া গেছে। অসীমের অবৈধ সম্পদ অর্জনের কারণ অনুসন্ধান করছে দুদক। প্রধান কার্যালয় থেকে নির্দেশনা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানিয়েছেন, অসীম গাইন ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও এই প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তরপত্র সরবরাহের কাজে জড়িত। অসীম রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে লাখ লাখ টাকার চুক্তি করেন। পরে তার অন্য সহযোগীদের নিয়ে উত্তরপত্র মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরবরাহ করেন। পুরো ঘটনা জেলার গোয়েন্দা পুলিশ নজরদারি রেখেছে এবং তদন্তও করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।