হুটহাট সব ভুলে গেলে খেতে পারেন এই মৌসুমি শাক

লাইফস্টাইল ডেস্ক : আমাদের দেশের শীতের সবজিগুলোর মধ্যে মুলার এক আলাদা জায়গা রয়েছে। দেশি ঝাঁজালো মুলা খাওয়ার সঙ্গে বায়ুদূষণের এক প্রচ্ছন্ন সম্পর্ক নিয়ে যতই হাসি-তামাশা হোক, মুলা দিয়ে চিংড়ি বা মাংসের তরকারি, মুলা-পুঁটির ঝোল বা হাতে মাখা ঝুরি করা মুলার ভর্তা ছাড়া শীতকাল কল্পনাই করা যায় না।

তবে শুধু মুলা কেন, এর শাকেরও রয়েছে আলাদা কদর। এ মৌসুমে বেশ সহজলভ্য মুলাশাক। মিহি কুচি করে দরাজ হাতে রসুন আর মরিচ দিয়ে ভাজি করা মুলাশাক হলে এদিনে ভাতের পাতে আর কিছুই লাগে না। তবে সুস্বাদু তো বটেই, এই মুলাশাকের রয়েছে অবাক করা সব স্বাস্থ্যগুণ।

মুলা যে শুধু আমাদের দেশে হয়, তা কিন্তু নয়। র‍্যাডিস নামে ইউরোপ ও মার্কিন মুলুকে সালাদ বা পিকেলস করে খাওয়া হয় মুলা। স্ট্যুতেও দেওয়া হয়। লাল ছোট গোল মুলা বেশি জনপ্রিয় পশ্চিমা দেশে র‍্যাডিস গ্রিনস বা মুলাশাকও খাওয়া হয় কুচিয়ে সালাদ বানিয়ে।

এদিকে জাপানে দাইকন নামের ঢাউস সাদা মুলা ছাড়া চলেই না কারও। সুশি হোক বা সাশিমি, পিকলড দাইকন থাকবেই সঙ্গে। চায়নিজরাও এ মুলা খুব খেয়ে থাকেন। আমাদের দেশে এখন দেশি ঝাঁজালো জাতের মুলার বদলে কিছুটা পানসে ও মৃদু স্বাদের চায়নিজ মুলাই বেশি হয়। আর সেই সঙ্গে প্রচুর জন্মে মুলাশাক। বাজারে মেলেও খুব সহজে। আবার মুলার বীজ থেকে মুলাশাকের মাইক্রোগ্রিনসও ফলানো যায় সহজেই।

এক কাপ বা ১২৮ গ্রাম রান্না করা মুলাশাকে আছে

ক্যালরি ৭০

শর্করা ৮.৩ গ্রাম

চর্বি ৩.৫ গ্রাম

আঁশ ২.৩ গ্রাম

এ ছাড়া দৈনিক চাহিদার শতাংশ হিসাবে আছে

পটাশিয়াম ১৬ শতাংশ

ম্যাগনেশিয়াম ২৮ শতাংশ

আয়রন ৭ শতাংশ

ভিটামিন সি ৭৭ শতাংশ

ভিটামিন কে ১৭১ শতাংশ

মুলাশাকে একদিকে যেমন ক্যালরি কম, তেমনি এতে আছে ভালো পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন আর পটাশিয়াম আর প্রয়োজনীয় ভিটামিন। পুষ্টিগুণ বিচারে মুলার চেয়ে বেশি উপকারী মুলাশাক। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মুলাশাকের এরুসামাইড নামক উপাদান স্মৃতিভ্রংশ প্রতিরোধ করে।

আলঝেইমার্স বা এমনি স্নায়বিক ও মস্তিষ্কের দুর্বল কার্যকারিতার জন্য হুটহাট সব ভুলে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে মুলাশাক নিয়মিত খেলে উপকার মিলবে। এ ছাড়া মুলাশাকের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ফুসফুসের কোষকে রক্ষা করতে পারে, এ রকম প্রমাণ মিলেছে গবেষণায়। মুলাশাকে মুলার চেয়ে বেশি ফাইবার আছে। তাই এটি হজমে সহায়ক তো বটেই, ওজন কমাতেও সাহায্য করে। আয়রন বেশি থাকায় ক্লান্তি দূর করে মুলাশাক। অ্যানিমিয়া থাকলে এ শাক নিয়মিত খাওয়া উচিত৷

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন