লাইফস্টাইল ডেস্ক : ইলিশ মাছ খেতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। ঠিক তেমনি নোনা ইলিশ বা ইলিশ মাছের শুঁটকি খেতেও পছন্দ করেন অনেকেই। চমৎকার নোনা স্বাদের ইলিশ ভর্তা কিংবা তরকারি খেতে খুবই সুস্বাদু। কেবল খেতেই সুস্বাদু নয় শুঁটকির রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা।
সম্প্রতি গবেষণায় জানা গেছে, নিয়মিত শুঁটকি মাছ খায় এমন ব্যক্তিদের ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর, যক্ষ্মা এই অসুখগুলো সহজে হয় না। এতে আয়রণ, আয়োডিনের মাত্রা বেশি থাকার জন্য দেহে রক্ত বাড়ায়, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করে শক্তিশালী, শরীরের হরমোনজনিত সমস্যাকে রাখে দূরে। শুঁটকি মাছ দেহে লবণের ঘাটতিও পূরণ করে।
এখন ইলিশ মাছে ভরা মৌসুম। বাজারে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। দামেও সস্তা। তাই ইলিশ মাছ শুঁটকি সংরক্ষণ করার এটাই উপযুক্ত সময়। আপনি চাইলে ইলিশ মাছের শুঁটকি তৈরি করে ফেলতে পারেন নিজেই। এমনকি নিজের তৈরি এই শুঁটকি এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করে খেতে পারবেন।
চলুন তবে জেনে নেয়া যাক লবণ দিয়ে ইলিশ মাছের শুঁটকি তৈরির পদ্ধতিটি-
প্রথমে ইলিশের আঁশ ছাড়িয়ে মাছের ভেতরের কানকো বা ফুলকা বের করে নিন। পাখনা ছেঁটে শুধু লেজটুকু রাখুন। এবার পুরো মাছটাকে খুব ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ১ ঘণ্টার জন্য পানি ঝরতে দিন। কিচেন টিস্যু দিয়ে বাড়তি পানি শুষে নিন। খেয়াল রাখবেন ইলিশ মাছে কোনো পানি থাকা চলবে না। চিপে চিপে পানি বের করে নিতে পারেন।
একটি পাত্রে হলুদের গুঁড়া এবং সবটুকু সামুদ্রিক লবণ মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করুন। পানি ঝরানো হয়ে গেলে মাছের গায়ে খুব ভালোভাবে হলুদ-লবণের মিশ্রণটি মেশান। যে কৌটায় মাছ সংরক্ষণ করবেন সেই কৌটার নিচে লবণ দিয়ে একটা প্রলেপ তৈরি করুন। তারপর এক লেয়ার মাছ দিয়ে দিন। মাছ দেওয়া হয়ে গেলে আবার এক লেয়ার লবণ দিয়ে দিন। মনে রাখবেন লবণ বেশি পরিমাণে দিতে হবে, না হলে মাছ নষ্ট হয়ে যাবে। এভাবে একদম শেষ লেয়ার মাছ দেওয়ার পরে উপরে লবণ দিয়ে দিন।
এবার কৌটার মুখ ভালো করে সিল করে দিন, যাতে বাতাস ঢুকতে না পারে। এই পাত্র ঘরের অন্ধকার ও ঠাণ্ডা জায়গায় সংরক্ষণ করুন। মাছ ভালো থাকবে অনেক দিন। তবে লবণ দেওয়া মাছ এক মাসের পর থেকে খেতে ভালো লাগে।
যখন দেখবেন বেশির ভাগ লবণ পানি হয়ে গেছে তখন লবণের পানিটা ছেঁকে মাছটিকে তুলে আরো একবার পানি ঝরতে দিন ২ ঘণ্টার জন্য। এরপর পানি ঝরে গেলে মাছটিকে একটা বেতের ডালায় রেখে দুই দিন খুব কড়া রোদে শুকাতে দিতে হবে।
শুকাতে দেওয়ার প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। ঘরের পুরোনো মশারি বা নেট দিয়ে পাত্রটিকে ভালোভাবে ঢেকে রশি পাকিয়ে মুখটা বেঁধে দিতে হবে। এবার ৪ থেকে ৫টি কালো মুরগির পালক মাছ শুকানোর স্থানে দড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে দিন। এতে করে কাক বা পাখিরা কাছে আসবে না। ২ বা ৩ দিন রোদে দেওয়ার পর একটা পুরোনো মাটির পাত্রে নোনা মাছ রেখে মুখটা পরিচ্ছন্ন কাপড় দিয়ে বেঁধে ঘরের যে স্থানে রোদ আসে এমন শুকনো কোনায় রেখে দিতে হবে।
সংরক্ষণ পদ্ধতি
>> সারা বছর সংরক্ষণ করতে চাইলে ইলিশের শুঁটকি ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। সেক্ষেত্রে বাদামি রঙের কাগজের ঠোঙাতে পেঁচিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে।
>> যদি আপনি ফ্রিজ ছাড়া শুঁটকি মাছ সংরক্ষণ করতে চান, তাহলে মাঝে মাঝে কড়া রোদে দিয়ে তারপরে সংরক্ষণ করবেন।
সতর্কতা
>> প্লাস্টিক বা পলিথিনে সংরক্ষিত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই প্লাস্টিক বা পলিথিনে শুঁটকি সংরক্ষণ থেকে বিরত থাকুন।
>> ইলিশ শুঁটকি রান্না করার আগে হালকা গরম পানিতে ক্ষানিকক্ষণ ভিজিয়ে রেখে বারবার পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে ঝুঁকি কমে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।