জুমবাংলা ডেস্ক : পুষ্টিগুণের দিক থেকে ইলিশ, রুই কিংবা পাবদার মতো জনপ্রিয় মাছগুলোর সঙ্গে টেক্কা দিতে পারে এমন কিছু কম পরিচিত মাছ রয়েছে। তেমনই একটি মাছ হলো ‘তোতা মাছ’ বা ‘প্যারট মাছ’। ঔষধিগুণে ভরপুর এই মাছটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী হলেও এখনো অনেকের কাছে অজানা রয়ে গেছে।
মাছ নিয়ে বাঙালির আবেগ পুরোনো নয়। দেশ-বিদেশে বাজারে ঘোরাঘুরি করেও অনেকেই জানেন না—কোন মাছগুলো স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী। সাধারণভাবে ধরা হয়, রুই, কাতলা বা ইলিশেই সব পুষ্টি সীমাবদ্ধ। কিন্তু বাস্তবে এমন কিছু মাছ রয়েছে, যেগুলোর পুষ্টিগুণ আরও বেশি এবং মূল্যও তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী।
এই ধরনের একটি মাছ হচ্ছে প্যারট মাছ বা বাংলায় যাকে বলা হয় ‘তোতা মাছ’। এটি ল্যাব্রিডে (Labridae) পরিবারের সদস্য। মাছটির মুখ তোতাপাখির ঠোঁটের মতো হওয়ায় এ নামেই পরিচিত। বৈজ্ঞানিক নাম Scarus coeruleus।
বিশ্বজুড়ে তোতা মাছের প্রায় ৯৫টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে। এর মধ্যে ২০টি প্রজাতি ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে বিশেষভাবে দেখা যায়। প্রবাল প্রাচীরে বাস করা এই মাছ শৈবাল খায় এবং পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর রঙ সাধারণত উজ্জ্বল সবুজ ও লালচে হওয়ায় জেলেরা একে সহজেই চিনতে পারেন।
এই মাছের আকৃতি প্রায় ৪ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং ওজন হতে পারে ৪৫ কেজি পর্যন্ত। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—এর দাঁতের সংখ্যা প্রায় ১০০০টি, যেগুলোর মাধ্যমে এটি প্রবাল ভেঙে ও শৈবাল খেয়ে জীবন ধারণ করে। এমনকি পাথরেও গর্ত করতে সক্ষম।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, তোতা মাছ পরিবেশ ও ঋতুভেদে নিজের রঙ পরিবর্তন করতে পারে। আরেকটি অভিনব বৈশিষ্ট্য হলো—এই মাছ স্ত্রী থেকে পুরুষে রূপান্তরিত হতে পারে, যা সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানে অত্যন্ত বিরল।
সাধারণত দক্ষিণ ভারতে একে “পেরুন্ধিরাল” নামে ডাকা হয়। যাদের সামুদ্রিক মাছের প্রতি আগ্রহ আছে, বিশেষ করে পুষ্টিসমৃদ্ধ কিন্তু কম প্রচলিত মাছ খুঁজছেন, তাদের জন্য তোতা মাছ হতে পারে এক অনন্য পছন্দ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।