সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মানিকগঞ্জের ঘিওরে দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধভাবে ড্রেজার বাণিজ্য করছে উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মোঃ ছানোয়ার হোসেন ও উপজেলা যুবলীগ নেতা আমিনুর ইসলাম। এতে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার কালীগঙ্গা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো।
রাজিৈতক পরিচয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে এমন রমরমা বালুর ব্যবসা চালালেও এ ব্যাপারে প্রশাসন কার্যকর কোন ভূমিকাই পালন করছেন না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে চলমান এসব অবৈধ ড্রেজারের কারণে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, দোকানপাট, বাজার, রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে রয়েছে। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এসব অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা বন্ধে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পয়লা ইউনিয়নের শ্রীধরনগর এলাকায় কালীগঙ্গা নদীতে দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে শ্রীধরনগর, বেগুননারচী, বাসুদেববাড়ী, বরুরিয়া এলাকায় বালু ব্যবসা করছে উপজেলা শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ ছানোয়ার হোসেন। এছাড়া ঘিওর সরকারি কলেজ ও ঘিওর ব্রীজের (পুরাতন) ১৫০ গজ দূরে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়েছে যুবলীগ নেতা আমিনুর ইসলাম। ভূূমিহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের নাম করে এসব ড্রেজার ব্যবসা চালানোর মৌখিক অনুমোদন দেয় স্থানীয় প্রশাসন। তবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়ে গেলেও বন্ধ হয়নি বালুখেকোদের রমরমা বাণিজ্য।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ শেষ হওয়ার পরেও অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা কিভাবে করছেন জানতে চাইলে ঘিওর উপজেলা যুবলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুর ইসলাম বলেন, নদীর বাক রাস্তার ও বাড়িঘরের দিকে যাচ্ছে। মানবিক কারণে এখান থেকে বালি উত্তোলন করছি। এখান থেকে না কাটলে রাস্তা ও ব্রিজ ভেঙ্গে যাবে। আশ্রয়ন প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের পাশাপাশি বাইরে কিছু জায়গায় ভরাট করি। বাইরে দুয়েক জায়গায় মাটি বিক্রি না করলে আমাদের খরচ উঠবে কিভাবে? আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলেই এগুলো করছি।
অপরদিকে, ঘিওর উপজেলা শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ ছানোয়ার হোসেন বলেন, এমপি মহোদয় রাস্তার দুইটা রাস্তার প্রকল্প দিয়েছে সেটা কাজ করেছি। সাথে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ করেছি, এখান থেকে শুধু তেল খরচ দিয়েছে। পাশাপাশি দুয়েক জায়গায় ভরাট করা হয়েছে। বাইরে বালি বিক্রির বিষয়ে প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা জানেন কি’না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে তো অন্য কোন লাইন দেয়নি, আমাকে বলেছে- এটা করে দিলে শুধু তেল খরচ দিবে। পাশাপাশি দুয়েক জায়গায় চালানোর অনুমতি দিবে।
এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হামিদুর রহমান বলেন, আজ সকালে অভিযান চালিয়ে তাদের ড্রেজার মেশিন ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিষয়টা আমাদের মাথায় আছে, তবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে কেউ অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা চালালে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।
ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে মানিকগঞ্জে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।