সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। মহাসড়কে বেড়েছে মানুষের চাপ। গন্তব্যে পৌছাতে দূরপাল্লাসহ বিভিন্ন ছোট বড় যাত্রীবাহী গাড়িতে করে ছুটছে মানুষ। আর এসব যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঢাকা আরিচা মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে থ্রী হুইলার, অটো রিক্সাসহ বিভিন্ন অবৈধ গাড়ি।
এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। হাইওয়ে পুলিশের যথাযথ তদারকির অভাবে এসব দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে মন্তব্য পরিবহন চালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমানোর লক্ষে বিভিন্ন জায়গায় মহাসড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। ঠিক একই সময়ে যাত্রীবাহী বাস ও মোটরসাইকেলের পাশাপাশি অবৈধ থ্রী হুইলার, লেগুনা ও অটোরিক্সা সহ অবৈধ যানবাহন চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ।
ঢাকা আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ের বারবাড়িয়া ব্রীজের পশ্চিম অংশ থেকে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৩৭ কিলোমিটার অংশে পড়েছে মানিকগঞ্জ জেলায়। এই মহাসড়ক হয়েই যাতায়াত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের। যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলমুখী মোটরসাইকেল আরোহীর সংখ্যা বাড়ছে মহাসড়কে। তবে অবাধে থ্রী হুইলার, লেগুনা, অটোরিক্সার কারণে যত্রতত্র ঘটছে দুর্ঘটনা।
শনিবার ভোর থেকে সকাল দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে মহাসড়কের পুরো এলাকা ঘুরে দেখা যায় থ্রী হুইলার ও লেগুনার আধিপত্য। মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বানিয়াজুড়ি এলাকা পর্যন্ত দলবেঁধে চলছে লেগুনা। আর বানিয়াজুড়ি থেকে উথুলী পর্যন্ত দেদারসে চলছে থ্রী হুইলার, অটোরিক্সা। এমনকি এ মহাসড়কের টেপড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে থ্রী হুইলার ও অটোরিক্সা।
পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় আলাপ হলে দুরপাল্লা যানবাহনের চালক ফয়সাল হোসেন বলেন, থ্রী হুইলার (সিএনজি), ইঞ্জিন চালিত রিকশা এবং লেগুনার চালকেরা অদক্ষ্য৷ এছাড়া মহাসড়ক এলাকায় তাদের চলাচলও অবৈধ। কিন্তু দেদারসে এসব যানবাহন ঘাট সংলগ্ন এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি চলছে। হাইওয়ে পুলিশের যথাযথ তদারকি থাকলে এসব যানবাহন কোনভাবেই মহাসড়কে উঠতে সাহস পাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মাছ বহনকারী ট্রাক চালক আমিনুর রহমান বলেন, ভোরে মহাসড়কের উথুলী থেকে তরা মাছের আড়ত এলাকা পর্যন্ত সিনএনজি, ইঞ্জিন চালিত ভ্যানের দখলে থাকে মহাসড়ক। কোন রকম দুর্ঘটনা ঘটলেই বড় যানবাহন মালিককে গুনতে হয় বড় অংকের জরিমানা। চাহিদা মোতাবেক টাকা না দিলেই পড়তে হয় মামলার ঝামেলায়। হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে আঁতাত না থাকলে কিভাবে এসব অযান্ত্রিক যান মহাসড়কে চলাচল করে বলে প্রশ্ন করেন তিনি।
মহাসড়কের উথলী বাসস্ট্যান্ড এলাকার একাধিক থ্রী হুইলার চালক জানান, সাংবাদিকরা নিউজ করলেই হাইওয়ে পুলিশ ঝামেলা করে। থ্রী হুইলার আটক করে থানায় নিয়ে যায়। কখনো টাকা পয়সা আবার কখনো মুচলেকা দিয়ে সিএনজি এবং ইঞ্জিন চালিত রিকশা আনতে হয়ে। মহাসড়ক এলাকায় ঝুঁকি থাকলেও আয় বেশি। এছাড়া একটু ম্যানেজ করে চললে কোন ঝামেলা হয় না বলে মন্তব্য করেন একাদিক সিএনজি চালকেরা।
বরঙ্গাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাকির হোসেন বলেন, থ্রী হুইলারসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযান চলামান রয়েছে। এখন মহাসড়কে কোন থ্রী হুইলার চলে না। মহাসড়কে আজ অনেক থ্রী হুইলার সরেজমিনে চলতে দেখা গেছে বলে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, শিঘ্রই অভিযান চালানো হবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) আব্দুল কাদের জিলানি বলেন, মহাসড়কে থ্রী হুইলার চলাচলের কোন সুযোগ নেই। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।