আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অনাস্থা ভোট শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে তিনি জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে নিয়েছেন। তবে এই রায়ে তিনি হতাশ। কারণ ‘বহির্বিশ্বের হস্তক্ষেপের দাবি নিয়ে তদন্ত করেনি সুপ্রিম কোর্ট।
শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এই ভাষণে ইমরান খান বলেন, ‘আমদানি করা সরকার’কে তিনি গ্রহণ করবেন না। এ জন্য রবিবার (১০ এপ্রিল) এশার নামাজের পরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের জন্য দেশের নাগরিকদের বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণের শুরুতে বলেন, ‘আমি রায়ে দুঃখিত, কিন্তু আমি এটা মেনে নিচ্ছি।’ তিনি দাবি করেন, সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদের আলোকে অনাস্থা প্রস্তাব স্থগিত এবং বিধানসভা স্থগিত করেন ডেপুটি স্পিকার। বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবে বিদেশি হস্তক্ষেপ ছিল। আমি (ইমরান) চেয়েছিলাম, সুপ্রিম কোর্ট অন্তত এটি দেখুক যে, একটি বিদেশি দেশ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন সরকারের পতন ঘটাতে চায়।’
এছাড়াও বিদেশি শক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘আপনি যদি সরকার পতনের বিদেশি প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করেন তবে আপনি আপনার ভবিষ্যতকে ঝুঁকিতে ফেলবেন।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘২৬ বছর আগে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ গঠন করার পর থেকে আমি যে নীতিগুলো মেনে চলেছি, তা পরিবর্তিত হয়নি। আগেও পাকিস্তানের অনাস্থায় বিদেশি হস্তক্ষেপ ছিল। এখনও আছে। তারা প্রতিবার ষড়যন্ত্র করে পাকিস্তান সরকার পতন করেছে। এবারও করতে চায়।’
তাকে গ্রেফতারের সময়ের কথা স্মরণ করে ইমরান খান বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিচার বিভাগই দেশের ন্যায়বিচারের অভিভাবক।’
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ের অর্থনৈতিক সংকট, বৈদেশিক ঋণের বোঝা, রুপির মূল্যমান কমে যাওয়া এবং দুর্নীতির ব্যাপকতা ইমরান খানের জন্য নতুন সংকটের জন্ম দেয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক জটিলতা। চীনের প্রতি অধিক নির্ভরতা, সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি, তালেবানদের মদদ দিয়ে মার্কিন বাহিনীকে আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে বাধ্য করা, ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি এবং বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহর অগ্রগতির জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠার কারণে ইমরান খান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর গাত্রদাহের কারণ হয়ে ওঠেন।
উইওন বার্তা সংস্থা মস্কো থেকে পরিবেশিত এক খবরে জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির জন্য ইমরানকে শায়েস্তা করতে চাইছে আমেরিকা। রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানের প্রস্তুতি পর্বে ফেব্রুয়ারিতে ইমরান খান মস্কো সফর করেন। আমেরিকার পক্ষ থেকে এ নিয়ে হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয় বলে ইমরান নিজেই দাবি করেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, আমেরিকা পাকিস্তানের রাজনীতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপ করছে। সূত্র : ডন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।