জুমবাংলা ডেস্ক : এক দশকের ব্যবধানে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১৩৫ শতাংশ। এর প্রভাব পড়েছে কেনাবেচায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, ক্রেতারা কাটছাঁট করে চাহিদা মেটানোয় বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে। আর আকাশচুম্বী দামের সঙ্গে ৫ শতাংশ ভ্যাট যেন ক্রেতার গলার কাঁটা। ফলে ভ্যাট ফাঁকি দিতে নয়-ছয় করছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই।
প্রাচীন কাল থেকেই প্রাচুর্যের অপর নাম স্বর্ণ। একে বলা হয়, অর্থের সবচেয়ে স্থায়ী রূপ। হাজার বছর ধরে মূল্যবান এই ধাতুর চোখ ধাঁধানো ঔজ্জ্বল্য, দীপ্তি আর চাকচিক্য মানুষকে অভিভূত করে চলেছে। হয়তো সে কারণেই এর মূল্য কখনো শূন্যে নামেনি। বরং দিন যতো যাচ্ছে, ততোই বাড়ছে এর মূল্য।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের ১ ভরি স্বর্ণের দাম ছিল ৪৫ হাজার ৭২৩ টাকা। ১০ বছরের ব্যবধানে ২০২৪ সালের মার্চে এসে তা ১৩৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজারে। যা এখন পর্যন্ত দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
দাম বৃদ্ধির এ প্রভাব পড়েছে বেচাকেনাতেও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্রমাগত স্বর্ণের দাম বাড়ায় এক দশকে বিক্রি কমেছে প্রায় অর্ধেক। মূলত স্বর্ণের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
আর ক্রেতারা বলছেন, স্বর্ণ কেনা এখন শুধু বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে স্বর্ণ কিনলেও পরিমাণে করতে হচ্ছে কাটছাঁট।
তবে যারাও স্বর্ণ কিনছেন তাদের অনেকেই আবার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে নারাজ। ফলে অনেকটা এদিক-সেদিক করেই ভ্যাট আদায় করতে হচ্ছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।
তারা বলেন, দাম বাড়ার কারণে ক্রেতারা ভ্যাট-মজুরি দিতে চায় না। তাই বেচাকেনা বাড়াতে হলে ভ্যাটের পরিমাণ কমাতে হবে।
এদিকে, দেশে স্বর্ণের দাম কেনো বাড়ছে — এমন প্রশ্নের জবাবে বাজুস বলছে, বৈশ্বিক মন্দা, অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ বাজারে তেজাবি স্বর্ণের কদর বাড়াই এর মূল কারণ।
বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং এন্ড মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ যখন সুদের হার বাড়ায় তখন স্বর্ণের দাম কমে যায়। কারণ ডলারের প্রতি মানুষ তখন ঝুঁকে যায়। ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। সুদহার কমলে বিশ্ববাজারে আরও বেড়ে যাবে স্বর্ণের দাম।
এছাড়া ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন জানিয়ে মাসুদুর রহমান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এখন ডলারের বদলে স্বর্ণ মজুতকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এতে বাড়ছে স্বর্ণের চাহিদা। আর চাহিদা বাড়ায় প্রভাব পড়ছে দামেও।
তবে বছর ব্যবধানে স্বর্ণের এ নিশ্চিত দাম বাড়ার কারণে সঞ্চিত সম্পদ হিসেবে দেশের রিজার্ভসহ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে চলেছে আভিজাত্যের এ বাহক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।