লাইফস্টাইল ডেস্ক : সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জীবন ও জীবিকার তাগিদে আমরা ছুটেই চলেছি। এই সময় থেকে বিরতি নিয়ে একটু অবসর বের করা বেশ কষ্টসাধ্য। অথচ শরীর আর মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের জন্য খানিকটা বিশ্রামের প্রয়োজন। নইলে প্রচুর চাপ সামলানোর পর মস্তিষ্ক পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ পায় না।
জেনে নিন আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় সাত রকমের বিশ্রামের কথা-
শারীরিক বিশ্রাম
দিনের পর দিন বিরামহীন কাজ করতে থাকলে শরীরে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। তাই সারা সপ্তাহের ক্লান্তি এবং বিরক্তি কমাতে শারীরিক বিশ্রামের খুব দরকার। সপ্তাহে অন্তত একদিন গভীর ঘুম দিন। ভোরে উঠে প্রকৃতির নির্জনতায় হেঁটে আসুন। এটি আপনার শরীরের কোষগুলোকে পরবর্তী দিনের কাজের জন্য চাঙ্গা করে তুলবে।
মানসিক বিশ্রাম
টানা পরীক্ষা, বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা কঠিন কোনো সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে থাকলে প্রচুর মানসিক চাপ নিতে হয়। মস্তিষ্কের ওপর কম চাপ সৃষ্টি করে, মাঝেমধ্যে এমন কাজ করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। নিরবচ্ছিন্ন তথ্য গ্রহণের প্রক্রিয়া থেকে বিরতি প্রয়োজন আমাদের মস্তিষ্কের। মনে শান্তি আনতে ইয়োগা, মেডিটেশন, ছবি আঁকা, বাগান করা বা নিজের পছন্দের যেকোনো কাজ করতে পারেন।
আবেগীয় বিশ্রাম
সবচেয়ে কাছের বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে, সাত বছরের দীর্ঘ সম্পর্কটি ভেঙে গেছে, বছরের পর বছর চাকরি হচ্ছে না- এমন নানা পরিস্থিতি আমাদেরকে ভেতর থেকে ক্ষয়ে দিতে থাকে। একটা সময় আমরা একাই গুমরে মরতে থাকি। এমন অবস্থায় দরকার ইমোশনাল রেস্ট বা আবেগীয় বিশ্রাম। মনের অনুভূতি খুলে বলুন, গোপন করার চেষ্টা করবেন না। বলতে না পারলে ডায়রিতে লিখুন; স্কিনকেয়ার করুন, বই পড়ুন, পডকাস্ট শুনুন- মন ভালো হবে এমন বিশ্রামে।
চেতনার বিশ্রাম
ডিজিটাল যুগে আমাদের মন আচ্ছন্ন হয়ে আছে জাগতিক কৃত্রিমতায়। রাস্তার কোলাহল, হর্নের উচ্চ শব্দ, চিৎকার-চেঁচামেচি থেকে স্মার্টফোন আর কম্পিউটার পর্দার নীল আলো আমাদের চেতনাকে সারাক্ষণ আচ্ছন্ন করে রেখেছে। একসঙ্গে আমরা এতকিছু করছি যে শেষ পর্যন্ত কোনোটাই ঠিকমতো হচ্ছে না। এখন প্রয়োজন ডিজিটাল ডিটক্সের। প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটা সময়ের জন্য ফোন থেকে দূরে থাকুন। ধীরে ধীরে এ সময় বাড়ান।
সৃজনশীল বিশ্রাম
কেউ কেউ অনেকদিন ধরে একই আবর্তে আটকে আছেন, কোনো কিছুতেই উৎসাহ পাচ্ছেন না। নতুন কিছুর আগে গড়িমসি করে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় নিয়ে নিন সৃজনশীল বিশ্রাম। আমাদের ভেতরে যেসব বিস্ময় লুকিয়ে আছে, তা এমন বিশ্রামে বেরিয়ে আসে। কবিতা লিখুন, কল্পনায় মনের বাড়িতে বিচরণ করুন, হেড়ে গলায় গান গেয়ে উঠুন। সৃজনশীল বিশ্রাম আপনাকে উদ্ভাবনের নতুন পথ দেখাবে।
সামাজিক বিশ্রাম
সামাজিকীকরণ অনেক সময়ই আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে। এমন অনেক সম্পর্ক থাকে, যা আমাদের চারপাশ আরও ঘোলাটে এবং জটিল করে তোলে। চাওয়া-পাওয়ার অঙ্ক না মিললে উষ্ণ সম্পর্কও হয়ে তিক্ত হয়ে ওঠে। সমস্ত সম্পর্ক আর দায়িত্বকে পাশ কাটিয়ে অন্তত একটা দিন নিজের মতো করে কাটান। নিজেকে একটু স্বস্তি দিতে এটুকু ‘মি টাইম’ খুব দরকার।
আত্মিক বিশ্রাম
জীবনে কখনো কখনো এমন সময় আসে যে, আমাদের অস্তিত্বই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। নিজের সিদ্ধান্তের ওপর আমাদের নিজেদেরই বিশ্বাস থাকে না। এসময় পথ হারানোর ভয়ও যোগ হয়। চোখ বন্ধ করে মেডিটেশন করুন, দর্শনতত্ত্বের বই পড়ুন। এতে আপনার অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।