সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে এবার আলুর আবাদ বেড়েছে। জেলায় মোট ১ হাজার ৬১৩ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছে। গত বছর আবাদ করা হয়েছিল ১ হাজার ৫৫৩ হেক্টর জমিতে।
এদিকে, জেলায় সরিষা আবাদ এবার কমে গেছে। জেলায় সরিষার মোট আবাদ হয়েছে ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে। গত বছর সরিষার আবাদ হয়েছিল ৭১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এবার ৮ হাজার হেক্টর জমির আবাদ কমে গেছে। অর্থাৎ এবার প্রায় ৬০ হাজার বিঘা জমিতে কমেছে সরিষা আবাদ (১ হেক্টর সমান সাড়ে ৭ বিঘা)।
মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার আলুর মোট উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর আলু উৎপাদন হয়েছিল ৩৮ হাজার মেট্রিক টন। গতবারের চেয়ে এবার দুই হাজার মেট্রিক টন আলু বেশি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। জেলায় সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয় ঘিওর উপজেলায়। এই উপজেলায় এবার ৫৫৪ হেক্টর জমিতে আলুর অবাদ হয়েছে। ঘিওরের পর বেশি আবাদ করা হয়েছে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায়। এই উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে। কৃষি অফিস জানায়, প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৮০ মণ আলু উৎপাদিত হয়।
অন্যদিকে, জেলায় এবার সরিষার মোট আবাদ হয়েছে ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১১ হাজার, সিংগাইর উপজেলায় ১১ হাজার, সাটুরিয়া উপজেলায় ৩ হাজার, ঘিওর উপজেলায় ৭ হাজার, দৌলতপুর উপজেলায় ১১ হাজার, শিবালয় উপজেলায় ৯ হাজার ও হরিরামপুর উপজেলায় সাড়ে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।
গত বছর জেলায় সরিষার আবাদ হয়েছিল ৭১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এবার ৮ হাজার হেক্টর অর্থাৎ ৬০ হাজার বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ কম হয়েছে। যদিও এবার সরিষা আবাদ বৃদ্ধিতে ৬০ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এবার শেষ সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় সরিষার আবাদ পিছিয়ে যায়। ফলে সরিষা আবাদ না করে রবি শস্য চাষে ঝুকে কৃষক। এছাড়া সরিষার চেয়ে আলু, পেঁয়াজ, ভুট্টা ও সবজি চাষ লাভবান হওয়ায় সেগুলো চাষাবাদ বৃদ্ধি পায়।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছর জুড়েই এবার আলুর ভালো দাম পেয়েছেন
তারা। এছাড়া আলু চাষে উৎপাদন ব্যয় যেমন কম, আলুর উৎপাদনও অনেক বেশি। বিঘা প্রতি ৮০ মণের মতো আলুর ফলন হয়। আলু চাষের পাশাপাশি একই জমিতে ভুট্টাসহ অনন্য ফসল চাষ করা যায়। ফলে আলু চাষে ব্যবহৃত সার ও কীটনাশকেই অন্যান্য ফসল ঘরে তোলা যায়। অন্যদিকে গত বছর সরিষার ভালো ফলন হলেও দাম মন্দা গেছে। মৌসুমে সরিষা বিক্রি হয়েছে আড়াই হাজার টাকা মণ দরে। আর বছর জুড়ে সরিষার দাম ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় ওঠানামা করেছে। ফলে সরিষা চাষে লাভবান হতে পারেননি কৃষক। কাজেই এবার সরিষা আবাদ কমে গেছে।
জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ জানান, সরিষার আবাদ কম হওয়ার এক নম্বর কারণ হলো শেষ সময়ের বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে জমি নরম থাকায় তা সরিষা চাষে অনপুযোগি ছিল। আর দ্বিতীয় কারণ হলো সরিষার চেয়ে আলু, পেঁয়াজ, ভুট্টা ও সবজি চাষে কৃষক বেশি লাভবান। ফলে সরিষার পরিবর্তে আলু, পেঁয়াজ, ভুট্টা ও সবজিসহ রবি শস্য চাষে কৃষক বেশি আগ্রহী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।